আর্কাইভ থেকে জনদুর্ভোগ

সেন্ট মার্টিনের সব হোটেল-মোটেল-রিসোর্টকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা

সেন্ট মার্টিনের সব হোটেল-মোটেল-রিসোর্টকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা
ঘূর্ণিঝড় মোখা শক্তিশালী হয়ে কক্সবাজারের দিকে এগিয়ে আসছে। ঘূর্ণিঝড়টি টেকনাফের সেন্ট মার্টিন দ্বীপসহ মিয়ানমারের উপকূল এবং এর আশপাশের ওপর দিয়ে বয়ে যাবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ফলে সেন্ট মার্টিনের বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে ট্রলারযোগে দ্বীপ ছেড়ে টেকনাফে আসতে শুরু করেছেন। বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত অন্তত ২০০ পরিবারের প্রায় দেড় হাজার মানুষ দ্বীপ ছেড়েছে বলে জানা গেছে। এ অবস্থায় সেন্ট মার্টিন দ্বীপের সব হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান গণমাধ্যমে বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপের সব হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে। তবে কত সংখ্যক মানুষ দ্বীপ ছেড়ে টেকনাফ চলে এসেছেন তার সঠিক পরিসংখ্যান বলা যাচ্ছে না। তবে  আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। দ্বীপে ১৭টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্র নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, বিজিবি, পুলিশ, জনপ্রতিনিধি, স্বেচ্ছাসেবকরা একযোগে কাজ করছেন। এদিকে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকায় বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে। শুক্রবার (১২ মে ) সকাল থেকেই কক্সবাজারের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। দুপুর আড়াইটা থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। স্থানীয় আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা আব্দুর রহমান বলেন, মোখা কক্সবাজার উপকূলের কাছাকাছি। ফলে সাগর কিছুটা উত্তাল রয়েছে। মোখার প্রভাবে ভারি বৃষ্টি হতে পারে। বাতাসের তীব্রতা বাড়বে। ফলে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প এবং পাহাড়ের বসতিগুলো ঝুঁকিতে পড়বে। তিনি আরও বলেন, সিডর ছাড়া গেল ১৫ বছরে বড় কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়নি কক্সবাজারে। এবার মোখা কক্সবাজার অভিমুখী হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতি বাড়ার শঙ্কা রয়েছে। মোখার প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে আগে থেকেই পাহাড় ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখা জরুরি। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান গণমাধ্যমে বলেন, মোখার কারণে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সব উপজেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। জেলার উপকূলীয় এলাকার সাইক্লোন শেল্টার ও বিদ্যালয়সহ ৫৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ১০ লাখ ৩০ হাজার নগদ টাকা, ৪৯০ মেট্রিক টন চাল, ৭ মেট্রিক টন শুকনো খাবার ও ১৯৪ বান্ডিল ঢেউ টিন মজুত রাখা হয়েছে। দ্বীপ অঞ্চলের মানুষের নিরাপত্তায়  আমরা সব সময় সজাগ আছি। আতঙ্কের কোনো কারণ নেই । উল্লেখ্য, দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় মোখা আরও উত্তর দিকে অগ্রসর এবং ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে বলে জানা গেছে। ফলে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়াও উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন সেন্ট | মার্টিনের | হোটেলমোটেলরিসোর্টকে | আশ্রয়কেন্দ্র | ঘোষণা