সংসদে ‘নামজপে’ সব রেকর্ড ভেঙে চুরমার করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। দু’ঘণ্টার বক্তৃতায় ৫৮ বার মোদির নামজপ করেন তিনি। দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও দলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ডের মোদির নামজপে অবাক দলেরই একাংশ। স্বাধীনতার পর থেকে সংসদে একজন মন্ত্রীর মুখে এতবার প্রধানমন্ত্রীর নাম আগে কখনও কেউ নিয়েছে বলে মনে করতে পারছেন না রাজধানীর রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরাও। বিরোধীদের কটাক্ষ, বিজেপি এখন আর ক্যাডার ভিত্তিক দল নেই। ব্যক্তিকেন্দ্রিক দলে পরিণত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিই সরকার, দল ও সংঘকে নিয়ন্ত্রণ করছেন। তাই তার নামজপে অমিত শাহকেও রেকর্ড গড়তে হচ্ছে।
তিন দিন ধরে সংসদে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের আনা অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় বুধবার বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মোট ২ ঘণ্টা ৭ মিনিট বক্তব্য রাখেন। নাম ধরে ধরে বিরোধীদের বক্তব্যের জবাব দেন। রাজনৈতিক বক্তৃতা থেকে নিজেকে সরিয়ে প্রশাসনিক তথ্য দেয়ার ওপরেই জোর দেন। গত নয় বছরে মোদি সরকার কি কি করেছেন সেই তথ্য তুলে ধরেন সংসদে। তার মধ্যেই সকলকে অবাক করে মোদির ‘নামজপে’ সকলকে ছাপিয়ে যান।
দলেরই এক সাংসদ জানান, মোট ৫৮ বার মোদির নাম মুখে এনেছেন শাহ। অর্থাৎ প্রতি আড়াই মিনিটে একবার মোদির নামজপ করেছেন। গত নয় বছরে দলের কোনও মন্ত্রী বা সাংসদ এতবার মোদির নাম একদিনে মুখে আনেননি। সরকার ও দলের সাফল্যের সব কৃতিত্বই এদিন মোদিকে দেন তিনি।
কেন এমন করলেন? রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এর পিছনে শাহর সুকৌশলী চাল রয়েছে।
প্রথমত, দলের অভ্যন্তরে মোদির প্রতি শাহর আনুগত্য প্রশ্নাতীত। তাসত্বেও জনসমক্ষে নিজেকে মোদির অনুগত প্রমাণ করলেন আরও একবার। আনুগত্য প্রমাণের প্রয়োজনও ছিল। কারণ যেহেতু মোদি এখন সরকার, দল ও সংঘের নিয়ন্ত্রক তাই বারবার তার নাম মুখে এনে নিজের চেয়ার আগে থেকেই সুরক্ষিত করতেই এই কৌশল নেন শাহ।
দ্বিতীয়ত, এবারেও লোকসভা নির্বাচনে গেরুয়া শিবিরের মুখ মোদি। সেই প্রচারই দেশবাসীর কাছে নিয়ে গেলেন শাহ। তৃতীয়ত, মোদি পরবর্তী মুখ নিয়ে দল ও দলের বাইড়ে আলোচনায় ঝড় ওঠে। এই দৌড়ে যে তিনি অন্তত নেই তা স্পষ্ট করে দিলেন। আলোচনায় ইতি টানতেই শাহর এই কৌশল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।