আর্কাইভ থেকে বিএনপি

মিথ্যাচার দিয়ে জিয়ার অবদান মুছে ফেলা যাবে না: মির্জা ফখরুল

মিথ্যাচার দিয়ে জিয়ার অবদান মুছে ফেলা যাবে না: মির্জা ফখরুল
যারা একটা রাষ্ট্রের জন্মের জন্য যুদ্ধ ঘোষণা করে, যারা জনগণের কল্যাণের জন্য একটা রাষ্ট্র নির্মাণের সমস্ত ভিত্তি তৈরি করে তাদের এভাবে মুছে ফেলা যায় না, ভুলিয়ে দেয়া যায় না। মিথ্যাচারের মাধ্যমে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের অবদানকে মুছে ফেলা যাবে না। বললেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ শুক্রবার (১৮ আগস্ট) রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে জিয়াউর রহমানের ৪২তম শাহাদাতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে রচনা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণীর এই অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করে তিনি তিনি বলেন, আমরা এই কথাও ভুলতে পারি না যে, শেখ মুজিবুর রহমানের যে লাশ তার বাড়ির সিঁড়িতে পড়ে ছিল …. তারপরে আওয়ামী লীগের নেতারা সরকার তৈরি করে। যারা আজকে মিথ্যা প্রচার চালায় যে এখানে জিয়াউর রহমান সাহেব জড়িত ছিলেন। তাদের একটাই উদ্দেশ্য জিয়াউর রহমানকে হেয় প্রতিপন্ন করা এবং তাকে একেবারে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা। সেটা সম্ভব নয়। মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে কত বছর হয়ে গেল জিয়াউর রহমানের নাম কি মুছে ফেলতে পেরেছে? পারে নাই, পারে না। যে সব মানুষ ক্ষণজন্মা, যারা ইতিহাস তৈরি করে, যারা একটা রাষ্ট্রের জন্মের জন্য যুদ্ধ ঘোষণা করে, যারা জনগণের কল্যাণের জন্য একটা রাষ্ট্র নির্মাণের সমস্ত ভিত্তি তৈরি করে তাদের এভাবে মুছে ফেলা যায় না, ভুলিয়ে দেয়া যায় না। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের ঘটনার সঙ্গে জিয়াউর রহমান জড়িত ছিলেন বলে প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য রেখেছেন তাকে মিথ্যাচার বলে অভিহিত করেন ফখরুল। তিনি বলেন, এখন ওরা এমন সব অলিক গল্প ফাঁদে যে, শহীদ জিয়াউর রহমান প্রয়াত নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এটা হচ্ছে শুধু ইতিহাসকে বিকৃত করা, যে আন্দোলন শুরু হয়েছে জনগণের গণতন্ত্র ফেরাতে, সেই আন্দোলনকে বিপথে পরিচালিত করা। তখন তো বিএনপির জন্মই হয়নি। শহীদ জিয়াউর রহমান তখন সেনাবাহিনীর প্রধান ছিলেন না। তিনি ছিলেন ডেপুটি প্রধান। যে সেনাবাহিনী প্রধান ছিলেন অর্থাৎ সেনা বাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান বিমান বাহিনী প্রধান তারা ওই দুর্ঘটনার পরে যখন খন্দকার মোশতাকের নেতৃত্বে সরকার গঠিত হয়েছিল তখন তারা সবাই স্যালুট করে খন্দকার মোশতাকে প্রতি তাদের আনুগত্য প্রকাশ করেছিল। রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে জিয়াউর রহমানের ৪২তম শাহাদাতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে রচনা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণীর এই অনুষ্ঠানে তিন পর্বে মোট ৬৯ জনকে পুরস্কার দেয়া হয়। এর মধ্যে প্রাথমিক স্তরে জিহাদ ইবনে ইমরান, মোস্তাকিম হাসান, হুমায়রা জান্নাত প্রার্থনা, মাধ্যমিক স্তরে এফতেখার এনাম নাহিদ, তালাম মাহমুদ নিবাস, আবু হাসান নাহিয়ান এবং উচ্চতর ও উন্মুক্ত স্তরে কানিজ ফাতেমা কনিক, আজম ইকবাল শিপন ও মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল নোমান নিজ নিজ বিভাগে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ দেশটাকে আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার পরে বলা যেতে পারে এককথায় দুঃশাসনের রাজ্য তৈরি করেছিল। তারা তাদের মতো করে এদেশকে একটা লুটপাটের রাজত্ব তৈরি করেছিল। একের পর এক তাদের নিজেদের তৈরি সংবিধান ভেঙেচুরে জরুরি অবস্থা, বিশেষ ক্ষমতা আইন এবং সবশেষে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান সিপাহী-জনতার বিপ্লবে যখন তাকে দায়িত্ব দেয়া হলো তখন তিনি দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। এর আগে আওয়ামী লীগ করেছিল একদলীয় শাসন ব্যবস্থা, সমস্ত পত্রিকার বন্ধ, মানুষের অধিকার হরণ। আর জিয়াউর রহমান করলেন বহুদলীয় গণতন্ত্র… সবাই রাজনীতি করবে, সংবাদপত্রের ওপর বিধিনিষেধ তুলে দেয়া হবে, মানুষ গণতান্ত্রিকভাবে তাদের কথাগুলো বলতে পারবে, মুক্ত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু করেছিলেন। সাড়ে তিন বছরে জিয়াউর রহমানের আধুনিক রাষ্ট্র গঠনের নানা পদক্ষেপগুলো তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশ গভীর সংকটে আছে। এই সংকট থেকে মুক্তির পথ আমাদেরকে দেখান শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। কারণ ১৯৭১ সালে যখন রাজনৈতিক নেতৃত্ব সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে, এমনকি যারা তখন পাকিস্তান সরকার ইয়াহিয়া খানের সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছিলেন… কীভাবে একটা আপোষরফা করা যায়, ফেডারেশন করা যায় কিনা সেই কথাগুলো বলছিল। সেই সময়ে জিয়াউর রহমান বুকে সাহস নিয়ে, বল নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে যুদ্ধ শুরু করেছিলেন-এটা একটা বিরল ব্যাপার, কোনো মানুষের পক্ষে এটা সম্ভব না। মির্জা ফখরুল বলেন, অন্যদিকে তিনি (জিয়াউর রহমান) তার মেধা, দক্ষতা, সততা দিয়ে সাড়ে তিন বছরেরর মধ্যে বাংলাদেশেকে যে হেনরি কিসিঞ্জার বলছিল বটমলেস বাসকেট… সেটাকে তিনি তুলে দিয়ে এসে একটা সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ তৈরি করেছিলেন। তার এই ধারাবাহিকতায় আমরা দেখেছি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তার সময়ে বলা হয়েছে যে সেটা ইমার্জিং টাইগার… আর এখন এটাকে বলা হচ্ছে ফ্যাসিবাদী লুটেরা এবং জনগণের সম্পদ হরণকারী একটা সরকার। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে জনগণ আজ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন মিথ্যাচার | দিয়ে | জিয়ার | অবদান | মুছে | ফেলা | মির্জা | ফখরুল