অবরোধ কর্মসূচিকে বাস্তবায়নে কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে সাধারণ মানুষকে ভীত করতে তাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কেউ কেউ দলীয় পরিচয় থেকে এই দায়িত্ব পালন করছে। কাউকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে, আবার কেউ টাকার বিনিময়ে কাজ করছে। বললেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার ড. খ মহিদ উদ্দিন।
বুধবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
এর আগে মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) মুগদা এলাকা থেকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের এক নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক শামিম মাহমুদকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, শামীম বিএনপির মহাসমাবেশ ও পরবর্তীতে নাশকতার মূল পরিকল্পনাকারী এবং নাশকতায় সক্রিয়ভাবে জড়িত। এই ছাত্রদল নেতা মহাসমাবেশের দিন পল্টনে পার্টি অফিস এলাকা এবং রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এছাড়া পল্লবী এলাকা থেকে মারুফ নামে একজনকে বাসে আগুন দেয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা এমন তথ্য দিয়েছেন।
মহিদ উদ্দীন বলেন, গেলো ২৬ অক্টোবর থেকে নাশকতার পরিকল্পনা করছিলেন শামীম। যা বাস্তবায়ন হয়েছে ২৮ অক্টোবর। সেদিনের ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, তিনি পল্টন পার্টি অফিস ও রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে নাশকতার জন্য ঢুকেছিলেন। ব্যাগে করে ককটেল নিয়ে সে মুহুর্মুহু বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন। তার দলীয় পরিচয় আমরা জেনেছি, তিনি ঢাকা দক্ষিণ ছাত্রদলের এক নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক।
শামীমের কেন্দ্রীয় এক নেতার নির্দেশনা অনুযায়ী সমাবেশের আগে দনিয়া ফুটওভার ব্রিজের নিচে গিয়ে মারুফ নামের একজন থেকে একটি ব্যাগ সংগ্রহ করেন। সেটি এনে রিয়াদ নামের একজনের কাছে নয়াপল্টনে পৌঁছে দেবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী সেটা করাও হয়। ২৮ তারিখে সে কাজগুলো তারা করতেও পারে সফলভাবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গেল মাসের ২৬ অক্টোবর সবুজবাগ থানার মানিকদিয় গ্রিন মডেল টাউনের ভেতরের শেষ মাথায় খালপাড়ে দুষ্কৃতকারীরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বিশৃঙ্খলা ও নাশকতা করার চেষ্টা করে। পরে পুলিশ টের পেয়ে সেখানে অভিযান চালায়। কিন্তু পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা একটি নীল রঙের মোটরসাইকেলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় জব্দ করা মোটরসাইকেলের সূত্র ধরে ছাত্রদল নেতা শামীমকে শনাক্ত করে পুলিশ।
এছাড়া বুধবার ভোরে রাজধানীর পল্লবীর ১১ নম্বর ওয়ালটনের গলিতে পার্কিং করা অবস্থায় বসুমতি পরিবহনের একটি বাসে অগ্নিসংযোগকারী মারুফকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মারুফকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে মহিদ উদ্দিন বলেন, বিএনপি নেতা সাজ্জাদ কাউন্সিলর ও জসিমের নির্দেশে ও তাদের প্রত্যক্ষ সহায়তায় ও প্ররোচনায় কেরোসিন ঢেলে এই বাসে আগুন দেয়। এই কাজের জন্য তাকে ৩ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় পল্লবী থানায় মামলা করা হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।