প্রেম এসেছে নীরবে। তবে সেটা একবার নয়, দু’বার। প্রথমে প্রেমে বিয়ে এবং সাত বছর সংসার হয়ে গেছে। তার জেরেই এখন তিন বছরের এক সন্তানও রয়েছে তাদের। কিন্তু তার পরও এসেছে দ্বিতীয় প্রেম। গ্রামেরই অন্য এক যুবককে মন দিয়েছেন স্ত্রী। আবার সেটা জানাজানিও হয়ে গেছে। গম্ভীর পরিস্থিতিতে কোনও খুন, প্রতিহিংসা দেখা যায়নি। বরং একেবারে চুক্তিপত্রে সই করে নিজের স্ত্রীকে নীরবে নতুন প্রেমিকের হাতে তুলে দিলেন স্বামী। তবে প্রথমজন তো ভালোবেসেই বিয়ে করেছিলেন। কোনও ভুল করেননি। তাই আজ চোখের জল ফেলে বলতে হয়েছে, ‘ও যখন থাকতে চায় না তখন কী করার আছে।’ তবে স্ত্রীর নতুন প্রেমিক পাল্টা বলছেন, ‘আমরা দু’জনই দু’জনকে পেয়ে ভালো আছি এবং ভালো রাখব।’ এ ত্রিকোণ প্রেমের ঘটনাস্থল ভারতের ধূপগুড়ি রেল স্টেশন সংলগ্ন বারোঘড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত অঞ্চলের ভেমটিয়া এলাকা।
এদিকে প্রথম প্রেমটি শিলিগুড়ির বাতাসি এলাকার যুবতীর জীবনে এসেছিল ঢেউ তুলে। পেশায় টোটোর মেকানিক ভেমটিয়ার যুবকের সঙ্গে দু’বছর টানা প্রেম করে বিয়ে করেন ওই যুবতী। তারপর শুরু হয় নতুন স্বপ্ন নিয়ে সংসার। সেই ঘোর কাটতে না কাটতেই ঘর আলো করে কোলে এলো এক সন্তান। কিন্তু তার মাঝেই আবার ঝড়ের বেগে হৃদয় কাঁপিয়ে দ্বিতীয় প্রেম এসে হাজির। এলাকারই এক ব্যবসায়ী যুবকের সঙ্গে বিবাহবর্হিভূত সম্পর্ক তৈরি হয় বধূর। এই দ্বিতীয় প্রেম চলাকালীন একদিন শীতের রাতে অন্ধকারে ওই বধূর সঙ্গে দেখা করতে আসেন দ্বিতীয় প্রেমিক। গাছের আড়ালে যখন একে অন্যকে আবিষ্ট করেছে তখনই সেটা দেখে ফেলেন পরিবারের এক সদস্য।
অন্যদিকে সেটা দায়িত্ব নিয়ে প্রথমজন অর্থাৎ স্বামী জানিয়ে দেন সেই সদস্য। তাতে ভীত হয়ে পড়ে যুবতী বধূ। কিন্তু তাঁর স্বামী তাকে কিছু না বলে শুধু জিজ্ঞাসা করেন, যা শুনছি সেটা কি সত্য? জবাব আসে স্ত্রীর পক্ষ থেকে, হ্যাঁ। তখন স্বামী জানান, তিনি এখনও এই স্ত্রীর সঙ্গে থাকতে চান। যদি স্ত্রী তার সঙ্গে থাকেন তবেই। না হলে স্ত্রীর ইচ্ছাকেই তিনি প্রাধান্য দেবেন। তবে তার স্ত্রী স্পষ্ট জানান, তিনি আর এখানে থাকতে চান না। আর তাতেই সায় দেন তার স্বামী। প্রেমিকের পরিবার, স্ত্রীর পরিবার এবং এলাকার বিশিষ্টদের ডেকে এনে সবার সামনে স্ট্যাম্প পেপারে চুক্তি করে স্ত্রীকে তার নতুন প্রেমিকের হাতে তুলে দেন স্বামী। ব্যস, এলাকারই একটি মন্দিরে বিয়ে সেরে ফেলেন দুজনে।
এই ঘটনা নিয়ে এখন গ্রামের মানুষজনের মধ্যে চর্চা তুঙ্গে উঠেছে। চায়ের তুফান তুলে ওই বধূই এখন আলোচনার শীর্ষে। তবে গৃহবধূ বলেছেন, ‘হঠাৎ করে প্রেম জীবনে আসেনি। এক বছর ধরে আমরা দু’জন একে অপরকে ভালোবাসি। সেটাই এখন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। মন যখন আমার, তখন সেটা কাকে দেব তার সিদ্ধান্তও আমারই হওয়া উচিত।’ আর সন্তান কোথায় গেলো? সন্তানকে নিজের কাছে রাখতে চেয়েছিল বধূ। ওরা সেটা মানেনি। আপাতত সন্তান ছেড়ে নতুন প্রেমিকের সঙ্গে সংসার পেতেছেন তিনি।