সত্যি সেলুকাস, কী বিচিত্র এই 'বিশ্ব'! গোটা পৃথিবী জুড়ে কত ভাষার, কত বর্ণের মানুষ, কত আজব রীতিনীতি প্রচলিত। লাখো-লাখো জনজাতির মধ্যে কত না আজব প্রথার চল। এই যেমন আফ্রিকার ইথিওপিয়ার আদিবাসী জনজাতি মুরসি এবং সুরি গোষ্ঠীর মেয়েদের ঠোঁট চিরে ঢোকানো হয় ইয়া বড় চাকতি, অনেকটা ঠিক চায়ের প্লেটের মত।
কীভাবে বসানো হয় এই চাকতি? সুরি আর মুরসি উপজাতির মেয়েদের ১৫-১৬ বছর বয়স হলেই নীচের ঠোঁট চিরে, কাটা জায়গায় কাঠের টুকরো গুঁজে দেয়া হয়। পরদিন সেই টুকরো বার করে একটু বড় আকারের টুকরো ঢুকানো হয়। তারপর দিন আরেকটু বড় টুকরো। এভাবে রোজ কাটা ঠোঁটে টান পড়তে পড়তে কাটা অংশের ফাঁকটা বাড়তে থাকে।
যখন ঠোঁটের কাটা অংশের ফাঁক অনেকটা বেড়ে যায়, তখন সেখানে মাটির গোলাকার চাকতি লাগিয়ে দেয়া হয়। কয়েকমাস বাদে বাদে সেই চাকতি বদলানো হয়। প্রথমে লাগানো হয় ছোট চাকতি, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে চাকতির সাইজ
একটা সময়ের পর ঠোঁটের কাটা অংশ চায়ের প্লেটের সাইজের চাকতি ধরে রাখতে সক্ষম হয়। সেটাই হয় সুরি আর মুরসি উপজাতির মেয়েদের স্থায়ী অলংকার। মাটির প্লেটে নানা রং দিয়ে আঁকা থাকে নকশা।
যতো বড় প্লেট ঠোঁটে ঢোকানো হবে, সেই নারীর গড়িমা ততো বেশি। অতবড় ঠোঁটের ভারে সুরি আর মুরসি উপজাতির মেয়েদের ঠোঁট উলটে ঝুলে থাকে গলা পর্যন্ত। নীচের পাটির দাঁত-মাড়ি সব বেড়িয়ে পড়ে।
পূর্ব আফ্রিকার ইথিওপিয়ায় বাস মুরসি উপজাতির। মূলত দক্ষিণ ইথিওপিয়া এবং সুদানের সীমান্তে অবস্থিত ওমান উপত্যকাই হয়ে উঠেছে তাদের বাসস্থান। mursi.org ওয়েবসাইটের পরিসংখ্যান বলছে, বর্তমানে মুরসি উপজাতির মানুষের সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। এই উপজাতি মনে করে, ঠোঁটের চাকতি নারীদের আত্ম-বিশ্বাস বাড়ায়। এই ঠোঁটের চাকতির কারণে বিয়ের সময় পাত্রপক্ষকে বিশাল টাকা পণ দিতে হয়।