একটা বড় বোন, যে কিনা অভাব মেটায় বাবা-মায়ের। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক ম্যাচে দুর্দান্ত ইনিংস খেলে সবার নজরে এসেছেন জাকের আলী। আর জাকের যখন খেলছেন মাঠে, প্রেস বক্সে থাকা একজন সাংবাদিকের চোখে তখন পানি। কারণ সেই সাংবাদিক জাকেরের বড় বোন শাকিলা।
ম্যাচ শেষে প্রেস কনফারেন্সে সাংবাদিক বোন প্রশ্নও করেছিলো ছোট ভাইকে। তবে এবার সাংবাদিক বোন আর ক্রিকেটার ভাইকে নিয়ে বিসিবির বড় আয়োজন। ক্রিকেটার ভাইয়ের সাক্ষাৎকার নেওয়ার সুযোগ সাংবাদিক বোনকে করে দিলো বাংলাদেশ ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
সাংবাদিক শাকিলা প্রথমে জাকেরের জাতীয় দলে খেলার অনুভূতি জানতে চান। জাকের বলেন, ‘আসলে খুব ভালো একটা অনুভূতি। জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন সবার থাকে। ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছা ছিল জাতীয় দলে খেলব, ম্যাচ জেতাব। আলহামদুলিল্লাহ, সবকিছু মিলিয়ে ভালো লাগছে।জাতীয় দলের পরিবেশ খুব ভালো লাগছে। প্রথম দিনে যেভাবে সবাই স্বাগত জানিয়েছে, এই জিনিসটা আমার কাছে বিশেষ ছিল। আমার মনে হয়েছে, আমি বিশেষ কেউ এসেছি, আমাকে সবাই যেভাবে বরণ করে নিয়েছে, খুবই ভালো লেগেছে।’
চার বছর আগে জাকেরের বাবা মারা গেছেন। বাবার স্বপ্ন ছিল, মাঠে বসে জাকেরের খেলা দেখবেন। সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। তবে পরিবারের কথা জাকের জানিয়েছেন হাসি মুখেই, ‘সবারই ভূমিকা ছিল। ভাইয়ের ভূমিকা ছিল। আপনারও ভূমিকা ছিল (বোনকে দেখিয়ে), আপনি অনেক কষ্ট করেছেন। আমাকে অনুশীলনে নিয়ে গিয়েছেন। সবারই স্বপ্ন ছিল, আমাকে এই জায়গাটায় দেখা। এখন আমার দায়িত্ব, কীভাবে আমি সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারি, দেশকে জেতাতে পারি। আমার মনে হয়, এখন কাজটা আরও বেড়েছে। প্রত্যাশামতো কাজটা করার চেষ্টা করব।’
সাংবাদিক বোনকে প্রশ্ন করেছেন জাকেরও। জানতে চেয়েছেন ভাইকে জাতীয় দলে দেখার অনুভূতিটা কেমন। শাকিলার উত্তর, ‘এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশের মতো না। অনেক দিন ধরে চেয়েছি, সেই ছোটবেলা থেকেই। এটা অনেক ভালো লাগার মুহূর্ত। আপনি ভালো বুঝবেন, আপনি জানেন আমাদের ইচ্ছা কতটা ছিল। প্রেসবক্সে বসে চোখে পানি আসছিল, বারবার মুছছিলাম। বাসায় সবাই টিভিতে খেলতে দেখে কান্না করছিল। আমি মাঠে অমনই বসে ছিলাম।’