ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান অভিযানের মাঝেই দুই জিম্মি ইসরায়েলির ভিডিও প্রকাশ করেছে স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলঅ হয়, হামাস ওই ভিডিওটি শনিবার (২৭ এপ্রিল) প্রকাশ করেছে। নতুন এই ভিডিওতে গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলা শুরুর পর আটক দুই ইসরায়েলি জিম্মিকে দেখা গেছে।
বাইবেল অনুসারে, ২৭ এপ্রিল দিনটিকে ইহুদিরা মিসরে দাসত্ব থেকে মুক্তির জন্য উদযাপন করে থাকে। এদিনটি ইহুদি সম্প্রদায় ছুটির দিন হিসেবে উদযাপন করে। আর এমনই দিনে ইহুদি জিম্মির ভিডিও প্রকাশ করলো হামাস।
শনিবার প্রকাশ করা জিম্মিদের ভিডিওটির সঙ্গে হামাসের আগে প্রক্শ করা ইসরায়েলি জিম্মিদের ভিডিওর মিল রয়েছে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়। ইসরায়েলি ওই দুই জিম্মি হলেন কেইথ সিজেল এবং ওমরি মিরান। তারা দুজনেই ক্যামেরার সামনে আলাদাভাবে কথা বলেছেন। এসময় তারা পরিবারের প্রতি ভালোবাসা জানানোর পাশাপাশি তাদের মুক্তির ব্যবস্থা করার আহবান জানান।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৭ অক্টোবর হামাসের অভিযান চলাকালে ওমরি মিরানকে নাহাল ওজ থেকে জিম্মি করা হয়। নিজ স্ত্রী ও দুই কন্যার সামনে থেকে তাকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে আসেন হামাস যোদ্ধারা।
অন্যদিকে, কেইথ সিজেল ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল-দুই দেশের নাগরিক। তাকে স্ত্রীসহ ইসরায়েলের একটি সীমান্ত শহর থেকে জিম্মি করা হয়েছিল। গত নভেম্বরে যুদ্ধবিরতির সময় তার স্ত্রীকে মুক্তি দেওয়া হয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশ্যে কথা বলার একপর্যায়ে সিজেল কাঁদতে শুরু করেন। গত বছর পরিবারের সঙ্গে ছুটির দিনটি উদযাপনের স্মৃতিচারণ করে আবারও পরিবারের সঙ্গে মিলিত হওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন সিজেল।
এদিকে, নিজেদের দুই জিম্মি নাগরিকের ভিডিও প্রকাশের ঘটনায় হামাসের কঠোর সমালোচনা করেছে ইসরায়েল। এ ঘটনাকে ‘মনস্তাত্ত্বিক সন্ত্রাসবাদ হিসেবে উল্লেখ করে’ এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস। এসমঢ তারা ১২০০ ইসরায়েলিকে হত্যার পাশাপাশি প্রায় ২৫০ ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে গাজায় বন্দি করে নিয়ে আসে। এর জবাবে একই দিন হামাসকে নির্মূল এবং বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে গাজায় বিমান হামলা ও পরবর্তীতে স্থল অভিযান চালায় ইসলায়েল। তাদের এই হত্যাযজ্ঞ এখনও চলমান রয়েছে।
বিভিন্ন দেশের দূতিয়ালিতে হামাস গত নভেম্বরে সাত দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিনিময়ে ১১০ ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দিলেও এখনো তাদের হাতে শতাধিক বন্দি আছেন। অন্যদিকে, গাজায় ইসরায়েলের চলমান অভিযানে নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আহত হয়েছেন আরও ৭০ হাজারের বেশি। নিহতদের বেশিরভাগই শিশু ও নারী।