সুনামগঞ্জে এবার তিন দফা বন্যায় আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সবকয়টি সড়ক। এতে এই জেলার প্রায় ২৭ লাখ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
এ জেলায় সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল এলজিইডি’র প্রায় ২৫০ কিলোমিটার গ্রামীণ আঞ্চলিক সড়কের ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভেসে উঠছে সড়কের ক্ষতচিহ্ন। ক্ষতিগ্রস্ত সড়কে চরম দুর্ভোগ নিয়ে যাতায়াত করছেন এলাকাবাসী।
এদিকে বন্যার পানি নামার পর সড়কপথে যাত্রীদের ভোগান্তি লাঘবে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক সাময়িকভাবে সংস্কার করে দেয়ার কথা জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। গ্রামীণ জনপদের অনেক এলাকাতেই এখন না চলছে সড়কযান, না নৌযান। পায়ে হেঁটে যাওয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে। অসুস্থ, বয়স্ক ও শিশুদের যাতায়াত ভোগান্তি অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। দুই বছর আগে শতাব্দীর ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বড় সড়কগুলোর মধ্যে দোয়ারাবাজার-বাউর কাঁপন, কালীপুর-পাগলা-জগন্নাথপুর, জামালগঞ্জ-জয়নগর, জামালগঞ্জ-সেলিমগঞ্জ, দোয়ারাবাজার-বাংলাবাজার, পাথারিয়া-বাংলাবাজার, দিরাই-কলকলিয়া, বিশ্বম্ভরপুর -আনোয়ারপুর, সুনামগঞ্জ-বেতগঞ্জ সড়কে এখনো কাজ করতে পারে নি এলজিইডি। একইভাবে গোবিন্দগঞ্জ-ছাতক- দোয়ারাবাজার, নিয়ামত-তাহিরপুর, মদনপুর-দিরাই ও শাল্লা এবং পাগলা জগন্নাথপুর-রানীগঞ্জ আউশকান্দি সড়কসহ জনগুরুত্বপূর্ণ অনেক সড়ক থেকে দুই বছর আগের বন্যার ক্ষত সারাতে পারেনি সড়ক বিভাগও। এর মধ্যেই এবারও তিনদফা বন্যায় এসব সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া এলজিইডির প্রায় ৪০০ কোটি টাকার কাঁচা পাকা গ্রামীণ সড়ক এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের ২৪৯ কোটি টাকার সড়ক পাহাড়ি ঢলে পানিতে নিমজ্জিত হয়ে চলাচল অনুপযোগী হয়েছে।
সুনামগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন বলেন, এবারের তিনদফা বন্যায় সড়কের, বিশেষ করে গ্রামীণ সড়কের যে ক্ষতি হয়েছে মেরামত করতে কমপক্ষে চারশ কোটি টাকা লাগবে। এর আগের ২০২২এর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কিছু সড়কের ইতোমধ্যে কাজ হয়েছে। বাকি যেগুলো এখনো হয়নি, সেগুলো মেরামত করতে আরও চারশ কোটি টাকা প্রয়োজন।
একইভাবে সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপজেলা সড়কসহ আঞ্চলিক মহাসড়কেরও ক্ষতি হয়েছে জানিয়ে এই বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম প্রাং বলেন, ২০২২ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামত করার জন্য একটি প্রকল্পে ১৭ কোটি টাকার কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আমরা স্বল্পমেয়াদী এবং দীর্ঘমেয়াদী দুইভাবে রাস্তার সংস্কারের কাজ করছি। এবার যে ক্ষতি হয়েছে, সেই সড়ক চালু রাখার জন্য ১৯ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। দীর্ঘ মেয়াদী কাজ করার জন্য ২৪৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা লাগবে জানিয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে।
কেএস/