দীর্ঘ ৪৯ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে হার মেনে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ বগুড়ার স্কুলশিক্ষার্থী জুনায়েদ ইসলাম রাতুল (১২)।
সোমবার(২৩ সেপ্টেম্বর) ভোরে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন রাতুলের বাবা জিয়াউর রহমান।
স্থানীয় সূত্র জানায়, কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভের মুখে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার দিন দেশের অন্যান্য স্থানের মতো বগুড়ায়ও বিজয় মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের ঝাউতলা এলাকায় পৌঁছলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর সদর থানা পুলিশের সদস্যরা গুলি চালায়। এ সময় রাতুল গুরুতর আহত হয়। তার মাথায় চারটি ছররা গুলি লাগে। একটি গুলি বাম চোখের মধ্য দিয়ে মাথায় ঢুকে যায়। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য ছররা গুলিবিদ্ধ হয়। রক্তাক্ত ও অচেতন অবস্থায় তাকে প্রথমে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ভর্তির পর তার মাথায় অস্ত্রোপচার করা হয়। চিকিৎসকরা খুলির অংশ কেটে মগজ থেকে একটি গুলি বের করেন। এক্স-রে রিপোর্টে তার মাথা, চোখসহ শরীরে শতাধিক গুলি পেয়েছেন চিকিৎসকরা। ৩৬টি গুলি অপসারণ করেছে। এরপর তাকে আইসিইউতে রাখা হয়। অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে কয়েকদিন আগে ওয়ার্ডের বেডে দেওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, রাতুল বেঁচে গেলেও দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারে।
জিয়াউর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, গত ৫ আগস্ট সকাল থেকেই বগুড়া শহরের বড়গোলা এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছিল রাতুল। ওইদিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ছাত্র-জনতার একটি মিছিল বগুড়া সদর থানার দিকে এগোনোর সময় পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এসময় মিছিলে থাকা রাতুল গুলিবিদ্ধ হয়। দীর্ঘ ৪৯ দিন পর আজ (সোমবার) ভোরে হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করে আমার সন্তান।
জেডএস/