ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালু রাখার দাবিতে আজও রাজধানীতে বিক্ষোভ করেছেন চালকরা। সায়েন্সল্যাব, ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুরের বসিলা, তেজগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকায় তাদের এ বিক্ষোভ চলছে। একই দাবীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণ অবস্থান কর্মসূচী পালন করছেন আন্দোলনকারীরা।
রোববার (২৪ নভেম্বর) সকাল থেকে রিকশাচালকরা এ অবরোধ শুরু করেন। এতে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী ইফতেখার হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, হঠাৎ করে সকাল সাড়ে ১০টা দিকে মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ চার রাস্তার মোড় ও ঢাকা উদ্যান এলাকায় অটোরিকশা চালকরা সড়ক অবরোধ করেন।
অন্যদিকে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ব্যাটারিচালিত রিকশা চালকরা যাত্রাবাড়ির কাজলার দিক থেকে মিছিল নিয়ে যাত্রাবাড়ী মোড়ে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন।
ডিএমপির ওয়ারী ট্রাফিক বিভাগের (যাত্রাবাড়ী) সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. আখতারুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, সার্বিক পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণে সেখানে পুলিশ সদস্যরা রয়েছেন। তারা শান্তিপূর্ণ পরিস্থিত বজায় রাখার চেষ্টা করছেন।
অন্যদিকে রাজধানীতে ব্যাটারী চালিত রিক্সা চলাচলের অনুমতির দাবীতে গণ অবস্থান কর্মসূচী পালন করছেন বিক্ষোভকারীরা। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই অবস্থান কর্মসূচীতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যাটারীচালিত রিক্সাচালকরা যোগ দিয়েছেন।
এর আগে, বুধবারও (২০ নভেম্বর) রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর দয়াগঞ্জ, মিরপুর, কল্যাণপুরসহ বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালকরা। পরের দিন মতো বৃহস্পতিবারও (২১ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে রাজধানীর মহাখালী, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, গাবতলী ও ডেমরা এলাকায় রাস্তা অবরোধ করেন তারা। এতে এসব এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ভোগান্তিতে পড়েন মানুষ।
সেদিন সড়ক অবরোধ করে মহাখালী রেলক্রসিংসহ রেললাইনে অবস্থান নেন তারা। রেলপথ অবরোধ করে আন্দোলন করায় যাত্রী নিরাপত্তার স্বার্থে ঢাকা থেকে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এ ছাড়া শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর জুরাইন এলাকায় সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন অটোরিকশা চালকরা। এতে পদ্মা সেতুর সঙ্গে ঢাকার রেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে ৪ ঘণ্টা পর ওই দিন ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় তিন দিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে এ বিষয়ে ব্যবস্থা না নেওয়া কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে রুলও জারি করেন আদালত। হাইকোর্টের আদেশের পরদিন থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ করছেন ব্যাটারিচালিত রিকশার চালকেরা।
বিক্ষোভকারীরা হাইকোর্টের নির্দেশনা প্রত্যাহার চান। তারা জানিয়েছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত অটোরিকশা চালানোর অনুমতি না দেওয়া হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালন করবেন। দেশে সিটি করপোরেশন থেকে প্যাডেলচালিত রিকশার লাইসেন্স দেয়ার বিধান আছে। তবে ব্যাটারিচালিত রিকশার লাইসেন্স দেওয়ার বিধান নেই। ২০১৩ ও ২০১৪ সালে ব্যাটারিচালিত রিকশার লাইসেন্স পেতে রিট করা করা হয়েছিলো। হাইকোর্ট ওই দুই রিটই খারিজ করে দেন।