সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেপ্পোর বেশিরভাগ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে দেশটির বিদ্রোহী সেনারা। গেলো আট বছরের মধ্যে এই নিয়ন্ত্রণকে বিদ্রোহীদের জন্য বড় সাফল্য হিসেবে ভাবা হচ্ছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হলে ২০১৬ রাশিয়া ও ইরানের সহায়তায় বাশার আল আসাদ বাহিনী উত্তরাঞ্চলের এই শহরটি বিদ্রোহীদের কাছ থেকে দখল নিয়েছিলো।
চলতি সপ্তাহে সিরিয়ার বিদ্রোহী জোট আলেপ্পোতে আকস্মিক আক্রমণ করে বসে। আর শনিবার সকালের মধ্যে শহরটির বেশির ভাগ এলাকা দখল করেছে, ভিডিও ফুটেজের সত্যতা যাচাইয়ের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যমটি।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, শহরটির প্রধান প্রধান স্থানে বিদ্রোহীদের অবস্থান নিতে দেখা গেছে। এর মধ্যে একটি ভিডিওতে বিদ্রোহীদের তাদের পতাকা ও আরবি ভাষায় ‘আল্লাহ মহান’ বলে চিৎকার করতে শোনা গেছে।
আরেকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, মধ্য আলেপ্পো শহরে একটি সিটাডেলে অবস্থান নিয়েছে বিদ্রোহীরা। এদের মধ্যে অস্ত্রে সজ্জিত একজন বিদ্রোহীকে বলছে ‘ আমরাই প্রথম এখানে এসেছি ও জয় করেছি।’
তবে শহরটির উত্তরপূর্ব এলাকা এখনো আসাদ বাহিনী ও ইরান সমর্থিত মিলিশিয়ার হাতে রয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।
এদিকে সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আলেপ্পোতে তাদের বেশ কিছু সেনা মারা গেছে। শহরে বিদ্রোহীদের প্রবেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে মন্ত্রণালয় এদিন দাবি করেছে, বিদ্রোহীরা তাদের অবস্থান শক্ত করতে পারেনি এবং পাল্টা আঘাত করতে দেশটির সেনাবাহিনী প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আলেপ্পোতে প্রবেশে এদিন সিরিয়ার সেনাবাহিনীর কাছ থেকে বিদ্রোহীরা তেমন বেগ পায়নি জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, শহরের খুব অল্প সংখ্যক জায়গায় মারামারির খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে রাশিয়ার বিমান বাহিনী শুক্রবার আলেপ্পো ও ইদলিবে হামলা চালায়, এমনটি জানিয়েছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম।
আলেপ্পো দখলের আগে গেলো বুধবার সিরিয়ার বেশকিছু বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত আরও কিছু দল মিলে ‘মিলিটারি অপারেসন্স কমান্ড’ নামে একটি জোট গঠন করা হয়। আর এই জোটের সদস্যরাই আলেপ্পোর বেশির ভাগ এলাকা দখলে নিলো।
উল্লেখ্য, সিরিয়ায় ২০১১ সালে গণতন্ত্রের দাবিতে শুরু হওয়া শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে সরকার দমন-পীড়ন চালালে তা গৃহযুদ্ধে রূপ নেয়। এর পর থেকে এই লড়াইয়ে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
এনএস/