দীর্ঘ আইনী লড়াইয়ের পর অবশেষে যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব ফিরে পেয়েছেন বহুল আলোচিত-সমালোচিত শামীমা বেগম। দেশটির সর্বোচ্চ আদালত সম্প্রতি এক রায়ে তার নাগরিকত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
বুধবার (১২ মার্চ) ব্রিটিশ মানবাধিকার সংগঠন ‘ইউকে হিউম্যান রাইটস ব্লগ’ এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। ব্রিটেনের সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের ফলে শামীমার ব্রিটেনে ফেরার পথ খুলে গেলেও, ব্রিটিশ সরকার তাকে ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেয়, তাই এখন দেখার বিষয়।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক শামীমা বেগম ২০১৫ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে দুই বান্ধবীসহ জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এ যোগ দিতে সিরিয়ায় পাড়ি জমান। সেখানে তিনি ডাচ নাগরিক ইয়াগো রিয়েডিকে বিয়ে করেন এবং চার সন্তানের জন্ম দেন। তবে বাচ্চাদের সবাই মারা যায়।
আইএস পরাজিত হতে থাকলে ২০১৯ সালে সিরিয়ার আল হোল শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেন শামিমা বেগম। সেখানে অবস্থানকালে ব্রিটিশ সরকার তার নাগরিকত্ব বাতিল করে দেয়।
নাগরিকত্ব বাতিলের পক্ষে তৎকালীন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ যুক্তি দেখিয়েছিলেন শামীমা বেগমের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে বাতিল করা হয়েছে। তবে পিতৃসূত্রে শামীমার বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ থাকায় তাকে রাষ্ট্রহীন করা হয়নি।
সিরিয়ার আইএস শিবিরে আশ্রয় নেয়া শামীমাকে বাংলাদেশে ঢুকতে দিতে রাজি হয়নি শেখ হাসিনার সরকারও। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়ে দিয়েছিলেন যেহেতু শামীমার বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নেই এবং তাই তিনি বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারবেন না।
শামীমার আইনজীবীরা ২০২৩ সালে তার নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেয়ার জন্য ব্রিটেনের সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানালে আপিল বিভাগ সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্টে চূড়ান্ত আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে এই রায় আসে। রায়ে বলা হয়, শামীমা বেগম তার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব কখনই হারাননি এবং তিনি ব্রিটেনেরই নাগরিক। ‘আইএস বধূ’ হিসাবে সংবাদমাধ্যমে পরিচিত শামিমার বয়স ২৪ বছর এবং তিনি সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আল-রোজ নামক এক বন্দি শিবিরে বসবাস করছেন।
এমআর//