এক সপ্তাহের মাথায় আবারও অভিশংসন ভোটের মুখোমুখি হতে চলেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল । দেশটিতে সামরিক শাসন জারির চেষ্টার কারণে বিরোধী দলগুলো তার বিরুদ্ধে অভিশংসনের চেষ্টা চালাচ্ছেন। এরই ধরাবাহিকতায় বিরোধী দলগুলো শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় বিকাল ৪টায় অভিশংসন ভোটের পরিকল্পনা করেছে। ভোটকে কেন্দ্র করে বড় ধরনের বিক্ষোভের পরিকল্পনাও রয়েছে তাদের।
এর আগে, গেলো ৭ ডিসেম্বর প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টি (ডিপি) প্রথম তার বিরুদ্ধে অভিশংসনের চেষ্টা চালিয়েছিল।
কাতারাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল গেলো ৩ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি করেছিলেন। যদিও জনগণের চাপের মুখে ছয় ঘণ্টার মধ্যে তা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হন তিনি। তবে সামরিক শাসন জারির চেষ্টার কারণে দেশটির জনগণ হতবাক হয়ে পড়েন। শুধু তাই নয়,তার নিজ দলের মধ্যেও বিভক্তি তৈরি হয়।
ইউন সুক-ইওল সামরিক শাসন জারির পর তার অভিশংসনের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে মানুষ। সেনাবাহিনী ও পুলিশকে উপেক্ষা করেই বিরোধী দল নিয়ন্ত্রিত পার্লামেন্টে অভিশংসন ভোট হয়। তবে সে ভোটে তিনি উতরে যান। যদিও বিষয়টি দক্ষিণ কোরিয়াকে সাংবিধানিক সংকটে ফেলে দিয়েছে। আইন ভঙ্গের কারণে দেশজুড়ে তার পদত্যাগের ব্যাপক দাবি উঠছে।
প্রথমবার বিরোধী দলগুলোর আনা অভিশংসন প্রস্তাব পাস করতে পার্লামেন্টে ৩০০ আসনের মধ্যে ২০০ ভোটের প্রয়োজন ছিল। তবে তার আগেই ক্ষমতাসীন দল পিপল পাওয়ার পার্টি (পিপিপি) অভিশংসন প্রক্রিয়া প্রত্যাখ্যান করায় বিরোধী দলগুলোর ওই চেষ্টা ব্যর্থ হয়।
এর পর থেকে পিপিপির নেতা হ্যান ডং-হুন দলের সদস্যদের দ্বিতীয় দফা ভোটে অভিশংসন প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছেন। অন্তত সাতজন পিপিপি নেতা বলেছেন, তারা প্রেসিডেন্টের অভিশংসনের জন্য ভোট দেবেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার এক-কক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টে ৩০০ আসনের ১৯২টি বিরোধী দলগুলোর নিয়ন্ত্রণে। অভিশংসন কার্যকর হওয়ার জন্য পার্লামেন্ট সদস্যদের দুই-তৃতীয়াংশ ভোট প্রয়োজন। সে হিসেবে বিরোধী দলকে পিপিপির অন্তত ৮টি ভোট পেতে হবে।
ইউনের দল পিপল পাওয়ার পার্টির কয়েকজন নেতা অভিশংসনের পক্ষে ভোট দেওয়ার কথা বললেও শুক্রবার দলটি জানিয়েছে, এবারের ভোটেও তারা অভিশংসন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করবে।
অভিশংসন প্রস্তাব পাশ হলে সাংবিধানিক আদালত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলকে অপসারণ বা পুনর্বহাল করার আগ আগ পর্যন্ত তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে কর্তৃত্ব হারাবেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সু ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। আদালত ইউনকে অপসারণ করলে বা তিনি পদত্যাগ করলে সংবিধান অনুযায়ী দেশটিতে ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে।
এমআর//