বিনোদন

না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন অভিনেতা প্রবীর মিত্র

বায়ান্ন বিনোদন ডেস্ক

অভিনেতা প্রবীর মিত্র ছবি: সংগৃহীত

ঢাকাইয়া চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা প্রবীর মিত্র আর নেই। রোববার (৫ জানুয়ারি) দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই বর্ষীয়ান এই অভিনেতা। চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর তার মৃত্যুর বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

আজ (সোমবার) বাদ জোহর প্রবীর মিত্রের মরদেহ এফডিসিতে নেওয়া হবে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।

রূপালী পর্দার ‘নবাব’খ্যাত কিংবদন্তি অভিনেতা প্রবীর মিত্র দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। গেলো ২২ ডিসেম্বর থেকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। রোববার সকালে প্রবীর মিত্রের শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। এ কারণে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। প্রবীর মিত্রের ছেলে নিপুণ মিত্র গনমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, ‘বাবার শারীরিক অবস্থা ভালো না। রোববার সকালে তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়। ডাক্তার বলেছেন, বাবার শরীরে ব্লাড থাকছে না। রক্তের প্লাটিলেট কমে যাচ্ছে। শরীরের ঠিকমতো অক্সিজেন পাওয়া যাচ্ছে না।’

১৯৪৩ সালের ১৮ আগস্ট কুমিল্লার চান্দিনায় জন্মগ্রহণ করেন প্রবীর কুমার মিত্র ওরফে প্রবীর মিত্র। পুরান ঢাকায় বড় হওয়া প্রবীর মিত্র স্কুলজীবন থেকেই নাট্যচর্চার সঙ্গে যুক্ত হন।বহুমুখী চরিত্রের অসাধারণ এক অভিনেতা প্রবীর মিত্র। মঞ্চ যার ব্যাকগ্রাউন্ড তাঁর তো এমনই হবার কথা। অনেক চরিত্রে নিজের আইডেনটিটি তৈরি করতেই স্বচ্ছন্দ ছিলেন। কখনো বাবা, ভাই, ছেলে, বন্ধু, চাচা, কখনও আবার পুলিশ অফিসার, ধনী, গরিব, জমিদার, অবার একতারা দোতারা হাতে শিল্পী, সন্তানহারা পাগল কিংবা হক মওলা জপতে থাকা এক দরবেশ-কোথায় নেই ভার্সেটাইল এই অভিনেতা। তার নামটি আসলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে অসংখ্য চরিত্রের ছবি। 

ভরাট কণ্ঠের অধিকারী প্রবীর মিত্রকে দেখা গেছে ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘চাবুক’-এর মতো সিনেমায় নায়কের ভূমিকায়। এছাড়া ‘রঙিন নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ সিনেমায় মুখ্য চরিত্রে ছিলেন তিনি। এ কারণেই  ভার্সেটাইল এই অভিনেতাকে ঢাকাই সিনেমার ‘রঙিন নবাব’ বলে ডাকেন। তার অভিনীত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলো হচ্ছে- জীবন তৃষ্ণা, সীমার, তীর ভাঙা ঢেউ, প্রতিজ্ঞা, অঙ্গার, পুত্রবধূ, নয়নের আলো, চাষীর মেয়ে, দুই পয়সার আলতা, আবদার, নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ ইত্যাদি।

১৯৮২ সালে মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘বড় ভালো লোক ছিলো’ চলচ্চিত্রে দুর্দান্ত অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান প্রবীর মিত্র।চলচ্চিত্রে অসামান্য অবদান রাখার জন্য ২০১৮ সালে আজীবন সম্মাননা বিভাগে প্রবীর মিত্রকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান করা হয়। ২০১৯ সাল পর্যন্ত এই ক্ষণজন্মা অভিনেতা প্রায় চার যুগ ধরে চার শতাধিক চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন।

এমআর//