অবশেষে গ্রেপ্তার হলেন দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল। স্থানীয় সময় বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
এর আগে চলতি মাসের শুরুর দিকে একবার ইউনকে গ্রেপ্তারের জন্য তার বাড়িতে কয়েক ঘণ্টার অভিযান চালায় তদন্তকারীরা। তবে তার নিরাপত্তা বাহিনীর বাধায় সেই অভিযান ব্যর্থ হয়। দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় বুধবার তাকে গ্রেপ্তার করা হলো।
কাতারাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল গেলো ৩ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি করেছিলেন। যদিও জনগণের চাপের মুখে ছয় ঘণ্টার মধ্যে তা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হন তিনি। তবে সামরিক শাসন জারির চেষ্টার কারণে দেশটির জনগণ হতবাক হয়ে পড়েন। শুধু তাই নয়,তার নিজ দলের মধ্যেও বিভক্তি তৈরি হয়।
ইউন সুক-ইওল সামরিক শাসন জারির পর তার অভিশংসনের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে মানুষ। সেনাবাহিনী ও পুলিশকে উপেক্ষা করেই বিরোধী দল নিয়ন্ত্রিত পার্লামেন্টে অভিশংসন ভোট হয়। তবে সে ভোটে তিনি উতরে যান।
প্রথমবার বিরোধী দলগুলোর আনা অভিশংসন প্রস্তাব পাস করতে পার্লামেন্টে ৩০০ আসনের মধ্যে ২০০ ভোটের প্রয়োজন ছিল। তবে তার আগেই ক্ষমতাসীন দল পিপল পাওয়ার পার্টি (পিপিপি) অভিশংসন প্রক্রিয়া প্রত্যাখ্যান করায় বিরোধী দলগুলোর ওই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। সাময়িক এ সামরিক আইন জারির জেরে পরবর্তীতে গেলো ১৪ ডিসেম্বর ইউনকে দেশটির পার্লামেন্টে অভিশংসন করা হয়। পরে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
বুধবার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলকে গ্রেপ্তারে তদন্তকারীদের প্রচেষ্টা প্রাথমিকভাবে রুখে দেন প্রেসিডেন্ট ইউনের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা (প্রেসিডেনশিয়াল সিকিউরিটি সার্ভিস-পিএসএস)। পরে তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন তদন্তকারীরা।
ইউন সুক ইওল এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে শুরু হয় ফৌজদারি তদন্ত। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তদন্তকারীদের তলবে হাজির হতে ইউন অস্বীকৃতি জানান। এর জেরে গত ৩১ ডিসেম্বর ইউনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন দক্ষিণ কোরিয়ার একটি আদালত।
ইউনের বিরুদ্ধে জারি করা ওই গ্রেপ্তারি পরোয়ানার মেয়াদ গত ৬ জানুয়ারি শেষ হয়। পরে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার মেয়াদ আদালত বাড়িয়েছেন বলে জানান তদন্তকারীরা। বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন অর্থমন্ত্রী চোই সান-মোক।
এমআর//