অন্তর্বর্তী সরকার যদি দ্রুত সংস্কার কাজ সম্পন্ন করে নির্বাচন দেয় তাতে জামায়াতের কোনো সমস্যা নেই। তবে সংস্কার ছাড়া নির্বাচন দেয়া হলে সেই নির্বাচন কাজে আসবে না। আরেকটি প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন জামায়াত চায় না বলে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে জানানো হয়েছে।বললেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
সাম্প্রতিক ইউরোপ সফর নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে সাংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
শফিকুর রহমান বলেন, জাতীয় নির্বাচনের তারিখ নিয়ে আমরা কাট অফ লাইন বলছি না। ৪১টি সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছি, এর মধ্যে মাত্র ৬টি বাস্তবায়নের উপর জোর দিয়েছি। ইউরোপের প্রতিনিধিরা জানতে চেয়েছে নির্বাচন কখন হবে, কীভাবে হবে-জবাবে আমরা বলেছি, দৃশ্যমান ও গ্রহণ যোগ্য মৌলিক সংস্কার, জুলাই অভ্যুত্থানের খুনিদের দৃশ্যমান বিচার এবং রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পরকে সম্মানের পরিবেশ সৃষ্টি হতে হবে।
জামায়াত আমির বলেন, প্রয়োজনীয় সংস্কার ও গুরুত্বপূর্ণ শর্তগুলো পূরণ না হলে নির্বাচনের তারিখ মার্চ-ফেব্রুয়ারি কোনো কিছুই ঠিক থাকবে না।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কারের যতো তাড়াতাড়ি সহযোগিতা করবে তত তাড়াতাড়ি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যদি এমন না হয়, তাহলে নির্বাচন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। দায় নিতে হবে রাজনৈতিক দলগুলোকে। প্রধান উপদেষ্টা জানিয়েছেন জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে, আমরা মনে করি সংস্কারের জন্য এ সময়টা গুরুত্বপূর্ণ। তবে তা যেন অতিক্রম না হয়।
তিনি বলেন, ইইউকে দেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছি। বলেছি, আমাদের জনশক্তি কাজে লাগানো যাবে। আপনাদের লাভের পাশাপাশি আমাদের দেশে কর্মসংস্থান তৈরি হবে। এতে দেশের শিল্পের স্থিতিশীলতা আসবে। ইকোনমিক জোন করারও আহ্বান জানিয়েছি। তারা এতে আগ্রহ দেখিয়েছে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, প্রবাসীদের নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ৮০ শতাংশ প্রবাসী বিদেশ করে আপন দেশে ফিরে আসতে চায়। তারা স্থায়ীভাবে বিদেশে বসবাস করতে চায় না। বিদেশে প্রবাসীদের বেতন কম। অনেকে সেখানে মানবেতর জীবন যাপন করেন। কারণ, আমাদের দক্ষ লোকবলের অভাব রয়েছে। একজন প্রবাসী মারা যাওয়ার পর লাশ নিয়ে টানাটানি হয়। তারা যদি দক্ষ হতো এমন সমস্যার মুখোমুখি হতে হতো না। আমরা ইইউকে দক্ষ শ্রমিক গড়ে তোলার জন্য আমাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছি।
তিন বলেন, সবগুলো দেশের মিশন যেন আমাদের দেশে করা হয়, সে বিষয়টি অনুরোধ করেছি। স্কিল ডেভলপমেন্টের মাধ্যমে জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রুপান্তর করা সম্ভব। এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের দেশের রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তাদেরকে সম্মানের সাথে ফিরিয়ে দিতে হবে। যা ইউরোপের দেশের সহযোগীতা ছাড়া বাংলাদেশ একা পারবে না।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ইইউ’র অধিকাংশ দেশ তারা পিআর সিস্টেমে রাজনীতি করে থাকে। তাদের সাথে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আগামী নির্বাচন যাতে সুষ্ঠ হয় এসব বিষয় উঠে এসেছে। জাতীয় স্বার্থে দল মত নির্বিশেষে সবাইকে এক থাকতে হবে। অনুরোধ জানিয়েছি তারা যেন আমাদের দেশে এসে ইনভেস্ট করে। তাহলে উভয় পক্ষ লাভবান হবো।
জেএইচ