আন্তর্জাতিক

ইরান ইউরোপের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে

ইসরাইল মানবজাতির সবচেয়ে বড় হুমকি : ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্য

বায়ান্ন আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ছবি: সংগৃহীত

ইরানে ইসরাইলের সাম্প্রতিক বিমান হামলা নিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে তীব্র বিতর্ক হয়েছে। স্পেনের বামপন্থী দল পডেমস-এর ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্য ইরেনা মোনতেরো বুধবার (১৮ জুন) স্ট্রাসবুর্গে পার্লামেন্ট অধিবেশনে ইসরাইলকে ‘মানবজাতির সবচেয়ে বড় হুমকি’ বলে অভিহিত করেছেন।

তিনি বলেছেন, “ইসরাইল অবৈধভাবে ইরানে হামলা চালাচ্ছে। ফিলিস্তিনিদের নিশ্চিহ্ন করছে। অথচ ইউরোপ কি করছে? উরসুলা ফন ডার লেয়েন (ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট) বলছেন, ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে। জার্মান চ্যান্সেলর কাইয়া কাল্লাস তো ইসরায়েলকে ধন্যবাদ দিচ্ছেন। কারণ ওরা আমাদের হয়ে ‘ঘৃণ্য কাজগুলো’ করছে।”

তিনি আরও বলেন, “আপনারা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে হুমকি বলছেন। কিন্তু ইসরাইলের নিজস্ব পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। আর যুক্তরাষ্ট্রই একমাত্র দেশ, যারা পারমাণবিক বোমা ব্যবহার করেছে।” 

তার এই বক্তব্যের পাল্টা জবাব দেন ডেনমার্কের এমইপি অ্যান্ডার্স ভিস্টিসেন। ড্যানিশ ডানপন্থী দল ডেনসক ফোকপার্টির এই নেতা বলেন, ইরান ইউরোপের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। তরা গুপ্তহত্যা করছে।  সন্ত্রাসী ষড়যন্ত্রে জড়িত। 

ভিস্টিসেন আরও বলেন, “যতদিন তেহরানে আয়াতুল্লাহরা ক্ষমতায় থাকবেন, ততদিন কোনও ইউরোপীয় নিরাপদ নয়। এই শাসনব্যবস্থাকে সরাতে হবে। তাদের পারমাণবিক কর্মসূচিকে ধ্বংস করতে হবে। এখন আপস নয়, বরং কঠোর পদক্ষেপের সময়।”

ইসরাইল গেল শুক্রবার ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ শুরু করে। যাতে  ইরানি সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি এবং আইআরজিসি প্রধান কমান্ডার হোসেইন সালামি নিহত হন। ইরান অপারেশন ট্রু প্রমিস থ্রি-নামে পাল্টা হামলা করে। তাতে তেলআবিবসহ ইসরাইলের বিভিন্ন কৌশলগত স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়। অনেকেই হতাহত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় অনেক স্থাপনা। 

এদিকে ইসরাইলের হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে লেবানন, সৌদি আরব, ইরাক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, রাশিয়া, চীন, মিশর, কুয়েত ও জর্ডানসহ বেশকিছু দেশ ও সংগঠন। এই হামলাকে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য ‘উদ্বেগজনক’ বলে উল্লেখ করেছেন আরব লীগ ও জাতিসংঘের মহাসচিব।  

ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা, বিশেষ করে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি ও ইইউ পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কাইয়া কাল্লাস, বারবার ইরানকে হুমকি হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তবুও তারা কূটনৈতিক পথেই সমাধান চাচ্ছেন। একই সঙ্গে ইসরাইলের ‘আত্মরক্ষার অধিকার’কেও সমর্থন করছেন তারা। 

অন্যদিকে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার ইসরাইলকে ‘সজ্ঞান’ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে দেশটি। রাশিয়া বলেছে, এসব হামলা বিশ্বকে ‘পারমাণবিক বিপর্যয়ের’ মুখে ঠেলে দিচ্ছে।আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য ‘অগ্রহণযোগ্য ঝুঁকি’ সৃষ্টি করছে।

  

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন #ইরান #ইসরাইল