বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ ও বৈরী আবহাওয়ার প্রভাব পড়েছে পটুয়াখালীর মহিপুর মৎস অবতরণ কেন্দ্রে। বৈরি আবহাওয়ার কারণে অনেকে সমুদ্রে নামতেই পারেননি। আবার যারা গিয়েছেন, তাদের অনেকেই ফিরেছেন খালি হাতে। ফলে ভরা মৌসুমেও ফাঁকা ইলিশের জন্য বিখ্যাত দেশের অন্যতম মহিপুর মৎস অবতরণ কেন্দ্র।
শনিবার (১২ জুলাই) বায়ান্ন টিভিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ কামরুল হাসান।
সরেজমিনে দেখা যায়, গত দুই দিন একটু আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ঘাট থেকে জেলেরা ছুটছেন সাগরে। বৈরি আবহাওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে যারা এর আগে সাগরে গিয়েছিলেন তারাও ফিরছেন লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে।
মাছ ধরা ট্রলার এফ বি আল হামিম এর মাঝি জলিল উদ্দিন জানান, ১০ দিন আগে তিন (০৩)লক্ষ টাকার বাজার নিয়ে সাগরে গিয়ে শুক্রবার ঘাটে এসেছেন। মাছ বিক্রি করেছেন ৭০ হাজার টাকার। আবার আজ সাগরে যাবেন। ছোট বড় সকল ট্রলার এর মাঝিদের একই অবস্থা।
মনোয়ারা ফিস এর ম্যানেজার মোঃ ফারুক নাজির বলেন, ভরা মৌসুমে কোথাও মাছ নেই আড়ৎ শূন্য। পাইকারা এসে চলে যাচ্ছেন মাছ না পেয়ে।
জেলারা জানান, ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে আশায় বুক বেঁধেছিলেন—এবার রূপালী ইলিশে ভরবে তাদের জাল, ফিরবে সুখের দিন। কিন্তু সাগরে পা দিতেই বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ঝড়ো হাওয়া আর উঁচু ঢেউ।
রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজের জেলে রফিক হাওলাদার বলেন, ‘পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকার বাজার করে ১৫ দিনের উদ্দেশ্যে গভীর সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছিলাম। কিন্তু সাগরে মাছ নাই। ঢেউয়ের জন্য জালই ঠিকভাবে ফেলা যায় না, মাছ থাকবেইবা কি করে? তিন-চার বার জাল ফেলছি। প্রতিবারই একই অবস্থা। তাই সমুদ্র থেকে জাল উঠিয়ে চলে আসছি।
মহিপুর ফিসারিজ এর মালিক বলেন, আমাদের এখান থেকে সারা বাংলাদেশে মাছ যায় কিন্তু এবছর এখনো জমে উঠছেনা যদি এভাবে চলতে থাকে প্রায় দুই (০২) লক্ষ জেলে বিপনন ও শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পরবে এই মহিপুর, আলিপুর মৎস্য আবতরণ কেন্দ্রের।
পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ কামরুল হাসান বলেন বৈরি আবহাওয়ার কারনে সাগরে জেলার ঠিক ভাবে জাল ফেলতে পারছেনা, আবহাওয়া অনুকূলে আসলেই সাগরে পর্যাপ্ত ইলিশ পাওয়া যাবে বলে আশা করছি, আর ভরা মৌসুম বলতে জুলাই আগস্ট কে বলা হলেও আবহাওয়ার পরিবর্তন এর কারনে কিছুটা সরে গেছে তবে আশা করছি মাছ পাওয়া যাবে।
রাঙ্গাবালী উপজেলা মেরিন ফিশারিজ অফিসার এস এম শাহাদাত হোসেন রাজু জানান, ‘নিষেধাজ্ঞার পর সাগরে মাছ থাকার সম্ভাবনা থাকলেও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে জেলেরা ঠিকমতো জাল ফেলতে পারছেন না। ফলে কাঙ্ক্ষিত মাছ ধরা পড়ছে না। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে মাছ ধরা বাড়বে বলে আমরা আশা করছি।”