প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের দাবি ন্যায্যভাবে সমাধান করা হবে। তাই সড়ক অবরোধ বা আন্দোলনের আর কোনো প্রয়োজন নেই বলে আশ্বস্ত করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
বুধবার (২৭ আগস্ট) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানও উপস্থিত ছিলেন।
দুই দিন ধরে শাহবাগে অবস্থান নিয়ে তিন দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন বুয়েটসহ বিভিন্ন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বুধবার তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ঘেরাওয়ের চেষ্টাও করেন।
এরই মধ্যে প্রকৌশলীদের দাবি যাচাই করে সুপারিশ দিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আট সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। এতে চারজন উপদেষ্টা ছাড়াও প্রকৌশল সংগঠনের প্রতিনিধিরা রয়েছেন। কমিটির নেতৃত্বে আছেন ফাওজুল কবির খান।
তিনি বলেন, ‘বিষয়টি শুরু হয়েছিল নেসকোর একটি ঘটনায়। সেখানে একজন প্রকৌশলীকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এরই মধ্যে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং শাস্তিমূলক বদলিও করা হয়েছে।’
উপদেষ্টা আরও জানান, ‘ডিপ্লোমাধারী ও বিএসসি ডিগ্রিধারীদের দাবির মধ্যে পার্থক্য আছে। আমরা উভয় পক্ষের কথা শুনে ন্যায্য সমাধান বের করব। শিক্ষার্থীদের বলব, তারা যেন রাস্তায় না থেকে নিজেদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে যায়। তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গেই আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
কমিটির আরেক সদস্য সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘আমরা যত দ্রুত সম্ভব বসে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করব। সম্ভব হলে কাল থেকেই বৈঠক শুরু হবে।’
শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি হলো—
১. নবম গ্রেড বা সহকারী প্রকৌশলী পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে কেবল বিএসসি ডিগ্রিধারীদের জন্য পরীক্ষা উন্মুক্ত করতে হবে। কোটায় পদোন্নতি কিংবা নতুন নামে সমমানের পদ সৃষ্টি করা যাবে না।
২. দশম গ্রেডের কারিগরি পদে নিয়োগ পরীক্ষায় ডিপ্লোমা ও বিএসসি ডিগ্রিধারীদের জন্য সমান সুযোগ রাখতে হবে।
৩. বিএসসি ডিগ্রি ছাড়া কেউ ‘ইঞ্জিনিয়ার’ পদবি ব্যবহার করলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তারা ছয় মাস ধরে এ দাবিগুলো জানিয়ে আসছেন। কিন্তু সরকার ব্যবস্থা না নেওয়ায় তারা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছেন।