গত ২৬ জুলাই থেকে বিভিন্ন দাবিতে টানা আন্দোলন করে আসছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) কর্মকর্তারা। এছাড়া গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে টানা কর্মবিরতি করছেন তারা। এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন বিশ^বিদ্যালয়ের কর্মচারীরাও। এখন তারা ১৬ দফা দাবি জানাচ্ছে। কর্মবিরতির পাশাপাশি সোমবার প্রশাসন ভবনের সামনে সকাল ৯টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত টানা চার ঘণ্টা তারা সাধারণ সভা করেছেন। আগামী শনিবারের মধ্যে তাদের দাবি পূরণ না হলে ওইদিনই পুনরায় সাধারণ সভা ডেকে আরো কঠোর কর্মসূচি নেবেন বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আন্দোলনে একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী উপাচার্যকে অমানবিক, অলস ও অযোগ্য আখ্যা দিয়ে তাকে হটানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এর আগে গত শনিবার তারা পাঁচ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন। এদিকে কর্মকর্তাদের একাংশ ১৬ দাবির মধ্যে দুইটি দাবির বিপক্ষে অবস্থান করছেন। দাবি থেকে উক্ত দাবিগুলো বাদ না দিলে তারা আন্দোলনে অংশ নেবেন না বলেও জানিয়েছেন। সেই দুইটি কর্মকর্তাদের প্রধান দাবি বলে জানা গেছে। দাবিগুলো হলো- চাকরির বয়সীমা ৬০ থেকে ৬২ তে উন্নীতকরণ এবং ন্যূনতম যোগ্যতায় পোষ্য কোটায় সন্তানদের ভর্তি।
এদিকে ক্যাম্পাসের সার্বিক পরিস্থিতি, আন্দোলন সহ বিভিন্ন বিষয়ে সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত শিক্ষক সমিতি ও ১২ টা থেকে ২টা পর্যন্ত শাপলা ফোরামের সঙ্গে তারই কার্যালয়ে পৃথকভাবে বৈঠক করেছেন উপাচার্য। এসময় বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, কোশাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া সহ সংগঠনগুলোর সভাপতি-সম্পাদক সহ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় আন্দোলনের বিষয়ে তাদের কাছে উপাচার্য সহায়তা কামনা করেন বলে জানা গেছে।
সভায় কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি এটি এম এমদাদুল আলম বলেন, আমরা আমাদের ন্যায়সংগত দাবিতে আন্দোলন করছি। আর উপাচার্য আমাদের সাথে অমানবিক আচরণ করছেন। এদিকে কতিপয় ব্যক্তি বিরোধিতা করে আমাদের আন্দোলনকে অন্যদিকে মোড় ঘোরানোর চেষ্টা করছে। যে সকল কর্মকর্তারা সামান্য কিছু অর্থের কারণে বিরোধিতা করছেন তাদের পরিণতি ভাল হবে না। আমাদের বিরুদ্ধে যারা কু রাজনীতি করছে তাদের বিরুদ্ধে এবং দাবি আদায়ে আমরা একসঙ্গে লড়ে যাবো। উপাচার্য দাবি না মানলে আগের ভিসিদের মতো বিদায়ের ঘণ্টা বাজবে। আমরা আমাদের দাবির পক্ষে অটল আছি। দাবি না মানলে আগামী শনিবারে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবো। যেসব কর্মকর্তা নিয়মিত অফিসে আসেন না বা কম আসে। অযোগ্য প্রশাসকের অবহেলা ও অলসতার কারণে কর্মকর্তারা উৎসাহ পেতে ব্যর্থ হয়।
আন্দোলন থেকে সরে যাওয়া কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান বলেন, আমরা চাকরির বয়স ৬২ বছরে উন্নীত করা ও পোষ্য কোটায় শর্ত শিথিল করা এই দুটি দাবির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছি। কারণ এই সময়ে এটি বাস্তবায়ন সম্ভব না। তবে আমি অন্য সব দাবির বিপক্ষে না।
শাপলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বলেন, উপাচার্য মহোদয় ভুল ট্রাকে চলছেন। কর্মকর্তাদের আন্দোলনের বিষয়ে তিনি আমাদের সহযোগিতা কামনা করেছেন। শাপলা ফোরাম ও শাপলা মনোনীত সমিতিকে দুর্বল করে প্রশাসন আদর্শের বাইরে গিয়ে কাজ করছে তা তথ্য প্রমাণ দিয়ে বুঝানো হয়েছে। উপাচার্যকে নৈতিক ও আদর্শিক সকল ক্ষেত্রে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলা হয়েছে, তার আগে অন্য কোন বিষয়ে শাপলা মন্তব্য করবে না।