সাধারণত দুর্নীতি বলতে আমরা আর্থিক দুর্নীতিকেই বেশি বুঝে থাকি। কিন্তু নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করাও অনেক বড় দুর্নীতি। স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরি করতে গেলে স্মার্ট জনপ্রতিনিধি ও স্মার্ট জনগণ দুটোই লাগবে। জনপ্রতিনিধি ও জনগণ তাদের নিজেদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করলেই দুর্নীতিমুক্ত স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরি করা সম্ভব। বলেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর তেজগাঁওস্থ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) আয়োজিত এক বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা জানান তিনি। ‘স্থানীয় সরকার শক্তিশালী করার মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব’ শীর্ষক ওই পাবলিক পার্লামেন্ট বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।
স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য শক্তিশালী স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার ওপর গুরুত্বারোপ করে মন্ত্রী বলেন, শক্তিশালী স্থানীয় সরকার বলতে শুধুমাত্র বাজেট বা টাকা-পয়সা দিয়ে সহায়তা বুঝায় না, রাজস্ব আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে স্থানীয় নানা ধরনের সমস্যার সমাধান করাও বুঝায়। সক্ষমতা বৃদ্ধি করে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে সে ধরনের অবস্থানে নিয়ে যাওয়াই সরকারের লক্ষ্য।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিদের জবাবদিহিতা ও তাদের কাজের মূল্যায়নের ওপরও জোর দেন। বলেন, ঢালাওভাবে জনপ্রতিনিধিদের খারাপ বলা উচিত নয়, তেমনি অনেক জনপ্রতিনিধি নানা ধরনের ভালো কাজ করছেন, তাদের সেই ভালো কাজের মূল্যায়নও সমাজে প্রয়োজন। এ সময় শিক্ষিত তরুণ সমাজের রাজনীতিতে আসার প্রয়োজন রয়েছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, তা না হলে অযোগ্য লোক সমাজকে নেতৃত্ব দেবে।
উন্নত বিশ্বের উদাহরণ তুলে ধরে তাজুল ইসলাম বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার ও স্থানীয় সরকার- কেউ কারও প্রতিদ্বন্দ্বী নয়। আইন দ্বারা এই দুই ব্যবস্থার কাজের পরিধি সুনির্দিষ্টভাবে ভাগ করা রয়েছে। তবে প্রশ্ন হচ্ছে- স্থানীয় সরকার তাদের নিজেদের কাজ সঠিকভাবে করছে কিনা, তাদের রাজস্ব আয়ের নানা ধরনের উপায় সৃষ্টি করতে পারছে কিনা এবং স্থানীয় মানুষকে তাদের সমস্যার অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাধানের দিকে নিয়ে যেতে পারছে কিনা। এ সময় স্থানীয় সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকার, দুটোই মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য কাজ করবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
দলীয় প্রতীক ছাড়া স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রসঙ্গেও মন্ত্রী বলেন, দলীয় প্রতীক ছাড়া স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কোনো সমস্যা নেই। দলীয় প্রতীক ছাড়া স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলে অনেক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নির্বাচন করার সুযোগ পাবে। তবে এতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘাত এবং সংঘর্ষ তৈরি হতে পারে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এ সময় রাতারাতি অবকাঠামো তৈরি করা সম্ভব হলেও মানুষের চিন্তা-চেতনার জগৎ রাতারাতি পরিবর্তন সম্ভব নয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের চিন্তা-ভাবনাও স্মার্ট হতে হবে।
এএম/