যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে প্রবাসী বাঙালি কমিউনিটিতে ঈদের আগের রাত অর্থাৎ চাঁদরাতের কদর বাড়ছে দিনে দিনে। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার রাতে নিউইয়র্কের বাংলাদেশি অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটস, জ্যামাইকা, ব্রঙ্কস ও ওজোনপার্ক এলাকায় মানুষের ঢল নামে। মেহেদীর রঙে হাত রাঙিয়ে যেমন উৎসবের সূচনা হয়, তেমনি বাঙালি কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের আবহে এই রাতও ঈদের আনন্দকে বাড়িয়ে দেয় কয়েকগুণ।
জ্যাকসন হাইটসে চাঁদরাত উদযাপন করতে আসা বাংলাদেশিদের মধ্যে যারা এসেছিলেন তার অর্ধেকই ছিলেন নারী ও শিশু। গভীর রাত পর্যন্ত জ্যাকসন হাইটসের ৭৩ ও ৭৪ স্ট্রিট ছিল লোকে লোকারণ্য।
একই ভাবে ব্রঙ্কসের স্টারলিং-বাংলাবাজার এলাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে বর্ণাঢ্য চাঁদ রাত মেহেদী মেলা। ঈদের আগের ব্রঙ্কসের স্টারলিং-বাংলাবাজার এলাকায় জমজমাট এ মেহেদী উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। বিপুলসংখ্যক নতুন প্রজন্মসহ প্রবাসী বাংলাদেশীদের উপচেপড়া ভীড় ছিল মেলা উৎসবে।
এসময় চাঁদ রাত উপভোগের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। চাঁদ রাত কিভাবে কাটাচ্ছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে চাঁদ রাতের উৎসবে আসা বাংলাদেশি এক তরুণ বলেন, ‘নিউইয়র্কে এইবার প্রথম। খুব ভাল লাগছে। অনেক মানুষ। বাংলাদেশের ঈদতো ডেফিনিটলি মিস করছি। তবে এখানে এসে মনে হচ্ছে, বাংলাদেশ খুব বেশি দূরে নয়। তবে ফ্যামিলিকে মিস করছি।’
অপর এক বাংলাদেশি তরুণ বলেন, ‘এখানে অসাধারণ। আমার চিন্তার বাইরে। চাঁদ রাতটা বাংলাদেশের থেকে অনেক আনন্দমুখর। পরিবেশটা অনেক উৎসবমুখর। বাংলাদেশের ঈদও আনন্দদায়ক, তবে এই প্রথম এখানে আমার ঈদ, এখানে মনে হচ্ছে খুব বেশি আনন্দদায়ক।’
বুধবার যুক্তরাষ্ট্রে উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদ উল ফিতর। তবে দেশটিতে থাকা অনেকেই বাংলাদেশে স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারছেন না বলে আক্ষেপ করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আসলে আমরা সবাই একসাথে আসতে পেরেছি। খুব উৎসব মুখর লাগছে। বাংলাদেশ আর এখানকার ঈদের পার্থক্যটা আমি বলতে পারি, বাংলাদেশে খুব ফান ছিলো না, এখানে অনেক ফান। আমরা জ্যামাইকা এভিনিউয়ে গিয়েছিলাম, তবে এখানে বেশি মজা। এখানে অনেক বন্ধু আছে, বিশেষ করে অনেক পুরাতন বন্ধু আছে। দেশের ঈদ ভুলে গেছি, এখানকারটা খুব মজা।’
চাঁদ রাত উদযাপন উপলক্ষ্যে নিউইয়র্কের বাঙালি অধ্যুষিত এলাকায় অনুষ্ঠিত বস্ত্র মেলায়ও গভীর রাত পর্যন্ত প্রবাসী বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণ ছিলো।