মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে আবারও বাংলাদেশ প্রসঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে। সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদ ও পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করেছেন বাংলাদেশি এক সাংবাদিক। পাশাপাশি র্যাবের কর্মকর্তাদের জাতিসংঘের মিশনে মোতায়েনের যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ওই সাংবাদিক।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের প্রেস ব্রিফিংয়ে মুশফিকুল ফজল আনসারী নামে বাংলাদেশি সাংবাদিক প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিলো-‘যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার মুখে থাকা বাংলাদেশের পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শকের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির খবর প্রকাশ হয়েছে। আপনি কী দয়াকরে বলতে পারেন মার্কিন কোনো সংস্থা কী যুক্তরাষ্ট্রে বা অন্য দেশে তার সম্পদের খোঁজ পেয়েছে এবং কোনো সম্পদ জব্দ করেছে? একইভাবে বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ সম্পর্কে কোনো তথ্য আছে কী? যার বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এরইমধ্যে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। বাংলাদেশের শাসকগোষ্ঠীর শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তি যারা অবাধে সবকিছু করে যাচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে মার্কিন সরকার কোনো ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে কিনা?'
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আপনার প্রথম প্রশ্নের জবাবে সম্মানের সঙ্গে জানাচ্ছি, নতুন করে ঘোষণা দেওয়ার মতো আমার হাতে কিছু নেইা
দ্বিতীয় প্রশ্নের জবাবে বলছি, ‘আপনি যেসব অভিযোগ ও সংবাদমাধ্যমের যেসব রিপোর্টের কথা উল্লেখ করেছেন, সে সম্পর্কে আমি জানি। আমরা স্পষ্ট করে বলেছি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শুরু থেকেই দুর্নীতির বিরোধিতা করে আসছে। দুর্নীতি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমিয়ে দেয়, উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে, সরকারকে অস্থিতিশীল করে ও গণতন্ত্রকে দুর্বল করে। শুরু থেকেই দুর্নীতির বিরোধিতা যুক্তরাষ্ট্রের মূল জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থ হিসেবে পরিণত। তবে এই প্রশ্নের বিষয়ে নতুন করে বলার মতো কিছু নেই। আমরা কখনোই নিষেধাজ্ঞা বা অন্যান্য পদক্ষেপের বিষয়ে আগে থেকে কিছু বলি না।’
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক সহকারী প্রেস সচিব মুশফিকুল ফজল আনসারী নামে ওই সাংবাদিক আরেকটি প্রশ্ন করেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারকে।
মুশফিকুল ফজল আনসারীর প্রশ্নটি ছিলো, ‘জার্মানভিত্তিক গণমাধ্যম ডয়চে ভেলে এবং সুইডেনভিত্তিক নেত্র নিউজের যৌথ অনুসন্ধানে জানা গেছে, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সাবেক ও বর্তমান সদস্যদের নিয়মিত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী হিসেবে মোতায়েন করা হয়।মার্কিন নিষেধাজ্ঞা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনের জন্য হতে পারে। র্যাবের কর্মকর্তাদের জাতিসংঘের মিশনগুলোতে মোতায়েন করা হচ্ছে, এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কতটা উদ্বিগ্ন। যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উল্লেখযোগ্য তহবিল দেয়, প্রায় ২৭ শতাংশ তহবিল মার্কিন করদাতাদের অর্থ থেকে?'
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা এসব রিপোর্ট সম্পর্কে যথেষ্ট অবগত আছি।আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা উন্নয়নে শান্তিরক্ষা কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আমরা বিশ্বাস করি শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের মানবাধিকার রক্ষা করা অপরিহার্য। নীতিমালা অনুসারে, জাতিসংঘ সেইসব দেশগুলোর ওপর নির্ভর করে যেসব দেশ মানবাধিকার লঙ্ঘন বা আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত সেনা বা পুলিশ পাঠাচ্ছে না।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওই ব্রিফিংয়ে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হতাযজ্ঞ বন্ধ, রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনের অস্ত্র সহায়তাসহ বিভিন্ন ইস্যুও স্থান পায়।
এমআর//