আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

আর্মেনিয়া-আজারবাইজানে রাতভর যুদ্ধ, নিহত ১০০ সেনা

আর্মেনিয়া-আজারবাইজানে রাতভর যুদ্ধ, নিহত ১০০ সেনা

দুই প্রতিবেশী দেশ আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজান নতুন করে যুদ্ধে জড়িয়েছে । সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতভর দুই দেশের যুদ্ধ হয়। এতে উভয়পক্ষের প্রায় ১০০ সেনার মৃত্যু হয়। নিহত সেনাদের ৪৯ জন আর্মেনিয়ার এবং ৫০ জন আজারবাইজানের।

বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির দেয়া এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান বলেছেন, সোমবার রাতভর ওই যুদ্ধে তাদের ৪৯ জন সৈন্য নিহত হয়েছে। 

অন্যদিকে আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওই সংঘর্ষে তাদেরও ৫০ জন সৈন্য নিহত হয়েছে।

আর্মেনিয়া প্রাথমিকভাবে বলেছিল, যুদ্ধ পুরোপুরি শেষ হওয়ার পরিবর্তে শান্ত অবস্থায় রয়েছে। 

পরে আজারবাইজান জানায়, তারা প্রতিবেশী দেশটির ‘উস্কানি’র কারণে তার উদ্দেশ্যগুলো সম্পন্ন করেছে।

বিবাদের মূলে রয়েছে নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল, যা মূলত দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিকভাবে আজারবাইজানের অঞ্চল হিসাবে স্বীকৃত। সাবেক সোভিয়েত এ দুই রাষ্ট্র বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে ২০২০ সালে প্রাণঘাতী এক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল। দুই দেশের সৈন্যদের হামলা-পাল্টা হামলায় সেই যুদ্ধে উভয় পক্ষের সাড়ে ৬ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে।

ওই যুদ্ধের পর আর্মেনিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র রাশিয়া নাগোরনো-কারাবাখে কয়েক হাজার শান্তিরক্ষী মোতায়েন করে। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সেখান থেকে শান্তিরক্ষীদের পরে প্রত্যাহার করে নেয় মস্কো।

আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের মধ্যে বিরোধের কেন্দ্রে বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সীমান্ত অনুযায়ী আজারবাইজানের অংশ, তবে সেখানে থাকে মূলত জাতিগত আর্মেনিয়ানরা।

তবে এই সাংস্কৃতিক বিভেদ কেবল রাজনীতিতে সীমাবদ্ধ নেই, এর পাশাপাশি ধর্মীয় বিভেদও দুই দেশের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি করছে। আর্মেনিয়া মূলত খ্রিস্টান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ, অন্যদিকে আজারবাইজান মূলত মুসলিম।

দুটি দেশই সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল। নাগোরনো-কারাবাখ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে ১৯৮০ এবং ১৯৯০ এর দশকে বড় আকারে যুদ্ধ হয়েছে। সর্বশেষ ২০২০ সালেও দুই দেশ ছয় সপ্তাহ ধরে এক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল।

বিবিসি বলছে, সর্বশেষ লড়াইয়ের জন্য দুই দেশ পরস্পরকে দোষারোপ করছে। আর্মেনিয়া দাবি করছে, সীমান্ত এলাকায় তাদের কয়েকটি শহরে আজারবাইজান গোলা বর্ষণ করেছে এবং তারা এই উস্কানির পাল্টা জবাব দিয়েছে।

অন্যদিকে আজারবাইজান বলেছে, তাদের অবকাঠামো প্রথমে হামলার শিকার হয়। তাদের সামরিক বাহিনীর একজন মুখপাত্র বলেন, গত মাস ধরে আর্মেনিয়ার সামরিক বাহিনীর তৎপরতা দেখে বোঝা যাচ্ছিল তারা একটি বড় আকারের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল।

এদিকে আজারবাইজান-আর্মেনিয়া সীমান্তে নতুন করে শুরু হওয়া লড়াইতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, তিনি এই বিষয়টি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে তুলবেন।

তাসনিয়া রহমান

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন আর্মেনিয়াআজারবাইজানে | রাতভর | যুদ্ধ | নিহত | ১০০ | সেনা