সম্প্রতি বন্যায় শেরপুর, লক্ষ্মীপুরসহ বেশ কয়েকটি জেলা তলিয়ে যায়। কিছ কিছু অঞ্চলে এখনও ঠায় দাঁড়িয়ে আছে বানের পানি। এমতাবস্থায় দেশের বন্যার প্রবণতা কমাতে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন ইসলাম বিষয়ক জনপ্রিয় বক্তা ও বেসরকারি সংস্থা আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ।
রোববার (০৬ অক্টোবর) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ পরামর্শ দেন তিনি। তাঁর ফেসবুক পোস্টটি বায়ান্ন টিভির পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরে হলো।
‘একটি কাজ করতে পারলে বন্যার প্রবণতা অনেকখানি কমানো যেত:
শেরপুর তলিয়ে গেছে। লক্ষ্মীপুরের অনেক এলাকা এখনো পানির নিচে। এক মাস যাবৎ ঠায় দাঁড়িয়ে আছে বানের পানি। কারণ ছোটখাটো খালগুলো সব মৃত প্রায়। অবৈধ দখল এবং নাব্যতা হারানো এসব খালে কখনো পরিচ্ছন্নতা অভিযান কিংবা খননকাজ করা হয়নি। ফলে পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে।
বন্যা পরিস্থিতিতে সাময়িকভাবে ত্রাণ বিতরণ যেমন জরুরি, তেমনই বন্যার ক্ষয়-ক্ষতি কমিয়ে আনার জন্য দীর্ঘমেয়াদী ও টেকসই পদক্ষেপ গ্রহণ করাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বন্যাকবলিত অঞ্চলগুলোতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা খালগুলো মানবদেহের শিরা-উপশিরার মতো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারত। কিন্তু রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় দখলদারিত্ব, অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ এবং অপরিকল্পিত উন্নয়নের কারণে এই খালগুলোর নাব্যতা ও স্বাভাবিক প্রবাহ প্রায় হারিয়ে গেছে। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে হয়নি পর্যাপ্ত ড্রেজিং বা খননকাজ।
যদি এই খালগুলোর যথাযথ গভীরতা, নাব্যতা ও স্বাভাবিক গতিপথ বজায় রাখা যেত, তবে বন্যার পানি দ্রুত নেমে যেতে পারত। ফলে আমরা বন্যার কারণে ঘটে যাওয়া প্রাণ ও সম্পদের বিরাট ক্ষতি থেকে অনেকাংশে রক্ষা পেতে পারতাম।
এবারের ভয়াবহ বন্যা আমাদের জন্য একটি সতর্কবার্তা। আমাদেরকে সারা দেশের খালগুলোকে দখলমুক্ত করে নিয়মিত ড্রেজিং এবং পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নত করার উদ্যোগ নিতে হবে।
এটি করতে পারলে আমরা স্থায়ীভাবে বন্যার ঝুঁকি কমিয়ে আনতে সক্ষম হব। এতে দেশবাসী যেমন চরম দুর্ভোগ থেকে রেহাই পাবে, তেমনি আমাদের অর্থনৈতিক ক্ষতিও অনেকাংশে হ্রাস পাবে। এই উদ্যোগই হতে পারে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ ও স্থিতিশীল দেশের প্রতিশ্রুতি।’
এমআর//