নির্বাচন কমিশনকে ভোটের সময় সরকারের ওপর কিছুটা খবরদারির এখতিয়ার দিতে হবে। তিন ধাপে ইসি নিয়োগ করা যেতে পারে। তৃতীয় ধাপে পার্লামেন্ট থেকে চূড়ান্ত প্রস্তাব যাবে রাষ্ট্রপতির কাছে। প্রথম ধাপে সকলের নামই প্রকাশ করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের বস্ত্র, পাট ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন।
শনিবার (১২ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে নির্বাচন কমিশনে কেমন সংস্কার চাই শিরোনামে আয়োজিত সেমিনারের তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ডিসিরা নির্বাচন করে এই কথা ঠিক না। আইনে ৩০০ আসনে ৩০০ রিটানিং অফিসার দেওয়া যাবে। আবার ডিসিদের দিতে হবে এমন কোনো কথা নেই।
তিনি বলেন, সার্বিকভাবে রাষ্ট্রের কাঠামো ভেঙে পড়েছে। অনেক জায়গায় মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। কাজেই দায়দায়িত্ব এখন থেকেই শুরু। অনেক রক্ত ঝরেছে। ৫০০ থেকে ৭০০ মানুষের চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। তারা বলেছে কোনো অসুবিধা নেই। কাজেই সবাই যদি ঠিক করতে না পারে শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি হবে।
নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, যে নির্বাচন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে কার্যকর করে না, সেটা সংবিধানের লংঘন। সরকার, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সহায়তা না করলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক দল সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করলে নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে না। গণমাধ্যম, নাগরিক সমাজসহ আরও অংশীজনদের সঠিক ভূমিকা পালন করতে হবে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, প্রজাতন্ত্রের মালিক যেন জনগণ হয়, সেজন্য কিছু সংস্কার প্রয়োজন। ইসি নিয়োগ আইন অবশ্যই সংস্কার করতে হবে। কোনো আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার মতো পরিস্থিতি তৈরি হলে সেখানে আবার নির্বাচন করতে হবে।
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়া নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার সম্ভব নয়। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যতটুকু কাজ প্রয়োজন সেটুকু করুক অন্তর্বর্তী সরকার। বাকি সংস্কার নির্বাচিত সরকার করবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার স্থায়ী হবে কি না, সে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
জামায়াত নেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, নির্বাচনি ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে। আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব নির্বাচন ব্যবস্থা প্রয়োজন। তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা সংশোধন করে স্থায়ীভাবে সন্নিবেশিত করতে হবে। একইসঙ্গে ইভিএম বাতিল করতে হবে।
প্রসঙ্গত, রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি) আয়োজিত এ সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি প্রমুখ।
আই/এ