ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের জার্মান দূতাবাসে আঘাত হেনেছে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র। রুশ ভূখণ্ডের সঙ্গে ক্রিমিয়ার সংযোগ স্থাপনকারী ক্রিমিয়া সেতুতে একটি ট্রাক বিস্ফোরিত হয়। এ সময় ট্রাকটির কাছে থাকা একটি গাড়িতে আগুন লেগে ৩ জন বেসামরিক ব্যক্তি মারা যান এবং একটি তেলবাহী ট্রেনেও আগুন ধরে যায়।
গেলো শনিবার (৮ অক্টোবর) জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় বার্তাসংস্থা রয়টার্স। হামলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ও হতাহতের সংখ্যা সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতুটি ইউরোপের অন্যতম দীর্ঘতম সেতু। সেতুটিকে ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করার প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ইউক্রেনে যুদ্ধরত রুশ বাহিনীর জন্য সেতুটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহ রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল। রাশিয়া এই সেতু ব্যবহার করে সামরিক সরঞ্জাম, গোলাবারুদ এবং কর্মীদের রাশিয়া থেকে দক্ষিণ ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে নিয়ে যেত।
এই ঘটনার পরপরই একে সন্ত্রাসী হামলা উল্লেখ করে পুতিন অভিযোগ করেছিলেন, ইউক্রেনের গোয়েন্দা বাহিনী রাশিয়ার বেসামরিক অবকাঠামোর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ধ্বংসের লক্ষ্যে এ হামলা চালিয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা মিখাইলো পোডিয়ালাক অবশ্য তাৎক্ষণিকভাবে পুতিনের অভিযোগ অস্বীকার করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রাম চ্যানেলে এক পোস্টে লিখেছিলেন, এখানে শুধু একটিই সন্ত্রাসী রাষ্ট্র রয়েছে; আর পুরো বিশ্ব জানে সেটি কে।
তবে শনিবার রাতে অনলাইনে পোস্ট করা এক ভিডিওতে ক্রিমিয়া সেতুতে বিস্ফোরণের ঘটনাটি পরক্ষোভাবে স্বীকার করে রাশিয়াকে কটাক্ষ করে বলেন, আজকের দিনটি খারাপ ছিল না এবং বেশির ভাগ সময়েই আমাদের রাজ্যের ভূখণ্ডে রোদ ছিল। শুধু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ক্রিমিয়ার আকাশ মেঘলা ছিল। তবে সেখানেও আবহাওয়া গরম ছিল।
তার এই বক্তব্যের ৪৮ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে, সোমবার সকাল থেকে রাজধানী কিয়েভ ও তার চারপাশে টানা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করে রুশ বাহিনী।
বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, সোমবার সারাদিনে কিয়েভ ও তার চারপাশে বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে ৮৩টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে রুশ বাহিনী। এসব লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে জার্মানির দূতাবাসও ছিল।
গেলো ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে রুশ বাহিনী ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর যে কয়েকটি দেশ ইউক্রেনকে সবচেয়ে বেশি সমরাস্ত্র ও আর্থিক সহায়তা দিয়েছে, সেসবের মধ্যে জার্মানি অন্যতম।
বিপ্লব আহসান