শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারে সবজির সরবরাহও বেড়েছে। ফলে কমেছে সবজির দাম। তবে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিলেও কাজে আসছে না কিছুই। এক মাস ধরে দাম বেড়েই চলেছে দেশের প্রধান খাদ্যশস্যের। এ ছাড়া আগের মতোই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মুরগি।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের দামের এমন তথ্য জানতে পারে গণমাধ্যম।
বাজারে বড় সাইজের ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ২০ টাকায়, একইভাবে প্রতি পিস বাধা কপিও বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়, লম্বা বেগুন প্রতি কেজি ৪০ টাকা, গোল বেগুন ৫০ টাকা, টমেটো ৬০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, শালগম ৩০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকায় ও পেঁয়াজের ফুল প্রতি মুঠো ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া মুলা প্রতি কেজি ২০ টাকা, গাজর ৬০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, শসা ৫০ টাকা, বিচি যুক্ত শিম ৬০ টাকা, সাধারণ শিম ৩০ টাকা, নতুন আলু ৪০ টাকা, নতুন লাল আলু ৫০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৬০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৩০ টাকা এবং মিষ্টি কুমড়া ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজির দাম বিষয় কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা শরিফুল ইসলাম বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রচুর পরিমাণে সবজি ঢাকায় আসছে প্রতিদিন। সব সবজি নতুন এবং টাটকা, আগের তুলনায় বাজারে প্রচুর পরিমাণে সবজির সরবরাহ হচ্ছে। যে কারণে বাজারে সবজির দাম কমে গেছে। কমপক্ষে আরো দেড় মাস সবজির দাম এমন কম থাকবে।
এদিকে চালের আমদানি বৃদ্ধি, শুল্ক কমানো ও ভর্তুকি মূল্যে বিক্রিসহ নানা উদ্যোগ নিলেও কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে চালের দাম।
ভরা মৌসুমে চালের চড়া দর নিয়ে খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতা এবং মিলাররা দুষছেন একে অপরকে। খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের দাবি, ভরা মৌসুমেও ধানের সংকট দেখিয়ে দর বাড়াচ্ছেন মিলাররা। মিল পর্যায়ে সরকারের নজরদারি না থাকার সুযোগটাই নেওয়া হচ্ছে। তবে মিলারদের দাবি, উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় কৃষক ধানের দাম বাড়িয়েছে। পাশাপাশি একশ্রেণির ব্যবসায়ী কৃষকের কাছ থেকে ধান কিনে মজুত করে এখন ইচ্ছামতো দর বাড়াচ্ছে।
চালের দামের এই ঊর্ধ্বগতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ভোক্তারা। তাদের প্রশ্ন, ৭০ টাকার নিচে ভালো কোনো চাল নেই। ভরা মৌসুমে চালের এতো দাম হলে, সামনের রোজায় কী হবে? অভিযোগ করে অনেকে বলেন, বাজার মনিটরিং না থাকার কারণেই যাচ্ছেতাইভাবে দাম বাড়াচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
এদিকে আগের মতোই চড়া মুরগির বাজার। প্রতি কেজি ব্রয়লার ১৯০ থেকে ২০০ এবং সোনালি জাতের মুরগি ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের নূরজাহান ব্রয়লার হাউসের বিক্রয়কর্মী মাঈন উদ্দীন জানান, শীতের সময় বিয়েসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান থাকায় মুরগির মাংসের চাহিদা বাড়ে। এ কারণে দাম চড়া।
অবশ্য বাজারে ডিমের দর কমেছে। প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়।
মাছের বাজারেও নেই কোনও সুসংবাদ। আকারভেদে প্রতিকেজি পাবদা মাছ ৩৫০-৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০টাকা, ছোট রুই ২৫০-৩০০ টাকা, ৪ থেকে ৫ কেজি ওজনের রুই ৪০০-৪৫০ টাকা, টেংরা ৬৫০ টাকা, চাষের শিং ৪৫০ টাকা ও পাঙাশ আকারভেদে ১৮০-২০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যাচ্ছে।
বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত নজরদারির পাশপাশি, সিন্ডিকেটে জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে ক্রেতারা।
আই/এ