লাইফস্টাইল

আর্থ্রাইটিস নিয়ন্ত্রণে খাবারের ভূমিকা

লাইফস্টাইল

ছবি: সংগৃহীত

আর্থ্রাইটিস যা মূলত জয়েন্টের ব্যথা ও শক্ত হয়ে যাওয়ার সমস্যা।  শরীরের বিভিন্ন অংশে যেমন- হাঁটু, কনুই, আঙুল ইত্যাদিতে প্রদাহ সৃষ্টি করে।  এর প্রধান উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে জয়েন্টে ব্যথা, শক্ত হওয়া, চলাফেরার অসুবিধা এবং ফোলাভাব।  যদিও আর্থ্রাইটিসের কোনো সম্পূর্ণ নিরাময় নেই তবে সঠিক খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে ব্যথা এবং প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।আর্থ্রাইটিসের জন্য যে খাবারগুলো উপকারী :

মাছ

স্যামন, টুনা, সার্ডিন—এই চর্বিযুক্ত মাছগুলোতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, যা প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।

বিনস

লাল বিনস, কিডনি বিনস, পিন্টো বিনস—এই খাবারগুলো সিআরপি (সি-রিঅ্যাকটিভ প্রোটিন) এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে, যা প্রদাহ কমায়।

বাদাম ও বীজ

পেস্তা, পাইন বাদাম, আখরোট—এই বাদামগুলোতে মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, যা প্রদাহ কমাতে সহায়ক।

বেরি

স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি, ব্ল্যাকবেরি—এই ফলগুলো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্থোসায়ানিনে ভরপুর, যা প্রদাহ দূর করে এবং জয়েন্টের স্বাস্থ্য রক্ষা করে।

পাতাযুক্ত সবুজ শাক

পালং শাক, ব্রোকলি—এগুলো ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ, যা হাড়কে শক্তিশালী করে এবং প্রদাহ কমায়।

সাইট্রাস ফল

কমলা, লেবু, ম্যান্ডারিন—এই ফলগুলোতে ভিটামিন সি থাকে, যা কোলাজেন উৎপাদন এবং তরুণাস্থির স্বাস্থ্য রক্ষা করে।

আদা ও রসুন

আদা এবং রসুনের প্রাকৃতিক প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য রক্ষায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

জলপাই তেল

জলপাই তেলে ওলিওক্যান্থাল থাকে, যা আইবুপ্রোফেনের মতো প্রদাহ-বিরোধী প্রভাব রাখে।

গ্রিন টি

গ্রিন টিতে পলিফেনলস থাকে, যা প্রদাহ কমাতে এবং তরুণাস্থি ধ্বংসের গতি কমাতে সহায়তা করে।

আর্থ্রাইটিসের জন্য যে খাবারগুলো এড়িয়ে চলতে হবে :

তামাক

তামাকের কারণে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের ঝুঁকি বাড়ে এবং এটি প্রদাহ আরও বাড়িয়ে দেয়।

ভাজা খাবার

ভাজা খাবার প্রদাহ বাড়াতে পারে, তাই এগুলি পরিহার করা উচিত।

প্রক্রিয়াজাত ও চিনিযুক্ত খাবার: চিনি এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার AGEs (অ্যাডভান্সড গ্লাইকেশন এন্ড প্রোডাক্ট) বাড়িয়ে দেয়, যা প্রদাহ সৃষ্টি করে।

দুগ্ধজাত দ্রব্য

কিছু মানুষের ক্ষেত্রে, দুগ্ধজাত খাবারের প্রোটিন জয়নটের টিস্যুতে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে, তাই এই খাবার এড়ানো উচিত।

লাল মাংস ও প্রক্রিয়াজাত মাংস

এই মাংসগুলোতে স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং প্রদাহজনক যৌগ থাকে, যা আর্থ্রাইটিসের লক্ষণ আরও খারাপ করতে পারে।

ট্রান্স ফ্যাট

ভাজা খাবার, মার্জারিন এবং প্যাকেটজাত খাবারে ট্রান্স ফ্যাট থাকে, যা প্রদাহ বাড়ায়। এগুলি খাদ্যাভ্যাস থেকে বাদ দেওয়া উচিত।

পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট

সাদা রুটি, পাস্তা ইত্যাদি পরিশোধিত শর্করা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায়, যার ফলে প্রদাহ বৃদ্ধি পায়।

অতিরিক্ত অ্যালকোহল

অ্যালকোহল, বিশেষ করে বিয়ার, পিউরিনের কারণে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়াতে পারে, যা আর্থ্রাইটিসের লক্ষণ আরও বাড়িয়ে তোলে।

উচ্চ-সোডিয়ামযুক্ত খাবার

টিনজাত স্যুপ, চিপস, প্রক্রিয়াজাত খাবারের মতো লবণযুক্ত খাবার জয়েন্টে ফোলাভাব বৃদ্ধি করতে পারে।

উল্লিখিত খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করলে আর্থ্রাইটিসের ব্যথা এবং প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। তবে খাবারের তালিকায় পরিবর্তন আনতে হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

এসকে// 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন আর্থ্রাইটিস | ব্যথা ও শক্ত