গ্রীষ্মের তীব্র গরমে ঠান্ডা পানি পান করার আকাঙ্ক্ষা অনেকেরই থাকে। কিন্তু আমরা অনেক সময় শুনে থাকি যে, ফ্রিজের ঠান্ডা পানি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তবে এই ধারণাটি কতটা সঠিক তা জেনে নেয়া যাক।
আমাদের শরীরের সঠিক হাইড্রেশন বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, অন্ত্র এবং ত্বকের স্বাস্থ্য ঠিক রাখা, কোষের ফাংশন সচল রাখা সব ক্ষেত্রেই পানি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে গ্রীষ্মে শরীরে পানির চাহিদা বেড়ে যায়। তাই যখন প্রচণ্ড গরমে গলা শুকিয়ে যায়, তখন ঠান্ডা পানি পান করার ভাবনাই সবার আগে আসে।
অনেকেই মনে করেন ফ্রিজে রাখা ঠান্ডা পানি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তারা মাটির পাত্রে রাখা পানি পছন্দ করেন , তারা বিশ্বাস করেন এটি শরীরের জন্য ভালো।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ফ্রিজের ঠান্ডা পানি বেশিরভাগ মানুষের জন্য একদম নিরাপদ। যতক্ষণ না পানি পরিষ্কার এবং পানযোগ্য, তাতে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
তবে শরীরের অবস্থা ভিন্ন হতে পারে। কিছু মানুষ ফ্রিজের ঠান্ডা পানি পান করলে শারীরিক কিছু নেতিবাচক প্রভাব অনুভব করতে পারেন। কিন্তু যদি আপনি কোনও সমস্যা না পান তবে ফ্রিজের ঠান্ডা পানি পান করা নিরাপদ।
ফ্রিজের ঠান্ডা পানি পান করার কিছু নেতিবাচক প্রভাব :
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন , ফ্রিজের ঠান্ডা পানি কিছু ব্যক্তির জন্য হজম বা শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। এর মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হল:
হজমে সমস্যা: ঠান্ডা পানি পান করলে হজম প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায়। এটি খাবারের সহজ হজমে বাধা সৃষ্টি করতে পারে, যার ফলে পেট ফাঁপা, গ্যাস, বা পেটব্যথার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
দাঁত ব্যথা: অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি পান করলে দাঁত ব্যথা হতে পারে, বিশেষত যাদের দাঁত সংবেদনশীল। ঠান্ডা পানি পান করা তাদের জন্য কষ্টকর হতে পারে।
গলা ব্যথা: কিছু লোকের জন্য ঠান্ডা পানি গলা ব্যথার কারণ হতে পারে। যদি গলার সমস্যার সম্মুখীন হন, তবে ঠান্ডা পানি এড়িয়ে চলাই ভালো।
হৃদরোগীদের সতর্কতা: বিশেষজ্ঞরা বলেন, গরমের দিনে ঠান্ডা পানি পান করা প্রয়োজন। তবে হৃদরোগী ব্যক্তিদের একসাথে অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি পান করা এড়িয়ে চলা উচিত। এর ফলে রক্তনালীতে খিঁচুনি হতে পারে, যা হৃদরোগীদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।
ফ্রিজের ঠান্ডা পানি বেশিরভাগ মানুষের জন্য নিরাপদ। তবে কিছু মানুষের জন্য এটি শারীরিক অসুবিধা তৈরি করতে পারে। সুতরাং , আপনার শরীরের প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য রাখুন এবং পানি পান করুন। যদি ঠান্ডা পানি পান করার পর কোনো নেতিবাচক প্রভাব অনুভব করেন , তবে এটি এড়িয়ে চলুন। তবে সঠিক পরিমাণে পানি পান করা এবং শরীরের হাইড্রেশন বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এসকে//