লাইফস্টাইল

সুন্দর-স্বাস্থ্যবান চুলের সহজ ও প্রাকৃতিক উপায়

লাইফস্টাইল

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চুলে পাক ধরা এক ধরনের প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। তবে যে কোনও বয়সেই নানা কারণে চুলে পাক ধরে যেতে পারে। হজমের গোলমাল, মানসিক চাপ, চুলের অযত্ন কিংবা বংশগত কারণে চুলে পাক ধরতে দেখা যায়। অনেকেই তখন চুলের রং ফেরানোর জন্য নানা রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করেন, কিন্তু এতে চুলের ক্ষতি হতে পারে। 

রাসায়নিক উপাদানে থাকা ক্ষতিকর উপাদান যেমন- প্যারাবেন, সালফেট, অ্যামোনিয়া ইত্যাদি চুলের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু প্রাকৃতিক উপায়েও চুল কালো করা সম্ভব সেটা কি জানেন? কিছু সহজ ও প্রাকৃতিক টোটকা চুলকে ফিরিয়ে দিতে পারে তার প্রাকৃতিক রং।তাহলে জেনে নেয়া যাক তার রহস্য। 

লিকার চা

চায়ের লিকারের মতো প্রাকৃতিক কন্ডিশনার খুব কমই পাওয়া যায়। এটি চুলের জন্য খুবই উপকারী। চায়ের লিকারে রয়েছে ক্যাটেচিন, যা চুলের পিগমেন্টেশন প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে এবং চুলের স্বাস্থ্য বজায় রাখে।

ব্যবহার পদ্ধতি:

এক কাপ পানিতে চা ফেলে ভালোভাবে ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করে ছেঁকে নিন। এরপর এই লিকার চুলে ঢেলে কয়েক মিনিট রেখে দিন। তারপর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত এই পদ্ধতি মেনে চললে ধীরে ধীরে চুলের রং ফিরে আসবে।

আমলকী

আমলকী চুলের যত্নে কতটা উপকারী, তা হয়তো আলাদা করে বলার প্রয়োজন নেই। এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি, যা চুলের স্বাস্থ্য বাড়াতে সাহায্য করে। এটি চুলের শিকড়কে মজবুত করে এবং চুল পড়া রোধে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

ব্যবহার পদ্ধতি:

নারকেল তেলে কাঁচা আমলকী ফেলে তেলটি ভালো করে ফুটিয়ে নিন। এতে আমলকীর রস তেলে মিশে যাবে। এমনকি আমলকীকে থেঁতো করে নারকেল তেলে মিশিয়েও ব্যবহার করতে পারেন। তেল ঠাণ্ডা হয়ে এলে এটি চুলে মেখে আধা ঘণ্টা রেখে শ্যাম্পু করে ফেলুন। কয়েকদিনের ব্যবহারে চুল কালো হতে শুরু করবে।

নারকেল তেল ও লেবুর রস

নারকেল তেল আর লেবুর রস একসঙ্গে ব্যবহার করলে চুলের কালো রং ফিরিয়ে আনা সম্ভব। নারকেল তেলে রয়েছে উচ্চমানের ফ্যাটি অ্যাসিড, যা চুলকে ময়েশ্চারাইজ করে এবং চুলের সুষম বৃদ্ধি নিশ্চিত করে। লেবুর রসে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড চুলের পিগমেন্টেশন বাড়াতে সাহায্য করে।

ব্যবহার পদ্ধতি:

দুই টেবিল চামচ নারকেল তেল ও দুই চামচ লেবুর রস মিশিয়ে নিন। তারপর এই মিশ্রণটি চুলের ত্বকে ভালো করে মালিশ করুন। রাতে ঘুমানোর আগে এটি ব্যবহার করা যেতে পারে। সকালে উঠে শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলুন। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে চুলের কালো রং ফিরে আসবে।

মেহেদী

মেহেদী (হেনা) চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি চুলকে কালো করার পাশাপাশি চুলের শিকড়কে মজবুত করে, চুল পড়া কমায় এবং খুশকি দূর করতে সাহায্য করে।

ব্যবহার পদ্ধতি:

মেহেদী পেস্ট তৈরি করতে, মেহেদী গুঁড়োতে পানি মিশিয়ে পেস্ট বানান এবং চুলে লাগিয়ে রাখুন ১-২ ঘণ্টা। এরপর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। মেহেদী ব্যবহার করলে চুলের মধ্যে মোলায়েমতা এবং কালচে ভাব ফিরে আসে।

কালোজিরা ও মধু

কালোজিরা চুলের জন্য একটি অত্যন্ত কার্যকরী উপাদান। এতে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান, যা চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। মধু চুলকে নরম ও মসৃণ করতে কাজ করে।

ব্যবহার পদ্ধতি:

কালোজিরা ও মধু মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এটি চুলের ত্বকে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহার করলে চুলের রং কালো হবে এবং চুল থাকবে মজবুত ও সুস্থ।

চুলের স্বাভাবিক রং ফিরিয়ে আনার জন্য রাসায়নিকের চেয়ে প্রাকৃতিক উপায় অনেক বেশি নিরাপদ। যদি প্রাকৃতিক উপাদানগুলো নিয়মিত ব্যবহার করা হয়, তবে চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এবং চুলে কালো ভাবও ফিরে আসবে। পাশাপাশি চুলের যত্নের জন্য পর্যাপ্ত পুষ্টি ও বিশ্রাম নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। চুলের সুস্থতা শুধুমাত্র বাহ্যিক যত্নের ওপর নয়,অভ্যন্তরীণ সুস্থতাতেও নির্ভর করে। ভালো খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত পরিচর্যাই পারে চুলকে প্রাণবন্ত এবং সতেজতায় ফিরে আনতে। 

 

এসকে//