আফগানিস্তান-তাজিকিস্তান সীমান্তের দুই-তৃতীয়াংশের বেশি এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে তালেবান। শুক্রবার রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্বৃতি দিয়ে এ কথা জানিয়েছে রুশ বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স। আফগান সরকার ও তালেবান উভয় পক্ষকেই সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানায়, তাজিক-আফগান সীমান্তে আগ্রাসন ও উস্কানি প্রতিরোধে দৃঢ়ভাবে কাজ করবে রাশিয়া এবং মস্কোর নেতৃত্বাধীন সিএসটিও সামরিক জোট।
বর্তমানে আফগানিস্তানের এক-তৃতীয়াংশ এলাকা তালেবানের দখলে। প্রতিদিনই নতুন নতুন জেলা সরকারি বাহিনীর হাত থেকে ছিনিয়ে নিচ্ছে তারা। বাদাখশানে দ্রুত ওই এলাকার প্রধান শহর ফায়জাবাদের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তালেবান যোদ্ধারা। এর জেরে কয়েক সপ্তাহ ধরে তাজিক সীমান্তবর্তী আফগান ঘাঁটিগুলো থেকে সেনারা পালিয়ে যাচ্ছে।
সবশেষ গেল রোববার তালেবানের আক্রমণের মুখে তাজিকিস্তানে পালিয়ে যায় প্রায় হাজারখানেক আফগান সেনা। আফগান সরকার জানিয়েছে, সেনাদের ফিরিয়ে নিয়ে আবারো তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পাঠানো হবে।
সম্প্রতি আফগানিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হামদুল্লাহ মহিব জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে আফগানিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলের অবস্থানত্যাগী দুই হাজার ৩শ সেনাকে আবারো দায়িত্বে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় এক সংসদ সদস্যের তথ্য অনুযায়ী, বাদাশখান প্রদেশের ২৮টি জেলার মধ্যে ২৬টিই দখল করেছে তালেবান। এর মধ্যে তিনটি এক প্রকার বিনাযুদ্ধেই পেয়েছে তালেবান। হামলার মুখে আরেক প্রতিবেশী দেশ উজবেকিস্তানেও আশ্রয় নিয়েছে বেশ কিছু আফগান সেনা।
সম্প্রতি আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বাহিনী প্রত্যাহারের ঘোষণার পর থেকে তালেবানের হামলা বেড়ে গেছে। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশটি থেকে বিদায় নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর সব সেনা। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সব বিদেশি সেনা আফগানিস্তান না ছাড়লে ভয়াবহ পরিণতির হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে তালেবান। তবে সশস্ত্র গোষ্ঠীটির সঙ্গে সরকারি বাহিনীর লড়াই আরও তীব্র হলে আশপাশের দেশগুলোতে আবারো আফগান শরণার্থীর ঢল নামতে পারে বলে শঙ্কা রয়েছে।
ইতোমধ্যে আফগানিস্তান সীমান্তের ক্রসিংগুলোতে সতর্কতা জারি করেছে তাজিকিস্তান। গেল সোমবার সীমান্তের নিরাপত্তা জোরদারে বাড়তি ২০ হাজার সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে দেশটি। তাজিকিস্তানে বিশাল সামরিক ঘাঁটি থাকা রাশিয়া বলেছে, আফগানিস্তান সীমান্তে স্থিতিশীলতার জন্য প্রয়োজনে সাহায্য করতে রাজি তারাও।
এসএন
