আর্কাইভ থেকে আন্তর্জাতিক

নাইজেরিয়ায় সন্ত্রাসী হামলা, ২ সেনাসহ নিহত ১৪

নাইজেরিয়ায় সন্ত্রাসী হামলা, ২ সেনাসহ নিহত ১৪
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ায় সন্ত্রাসীদের হামলায় দুই সেনা সদস্যসহ ১৪ জন মারা গেছেন। হামলার পর নারী ও শিশুসহ কমপক্ষে ৬০ জনকে অপহরণ করে বন্দুকধারীরা। রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) দেশটির উত্তরাঞ্চলে পৃথক হামলায় প্রাণহানির এ ঘটনা ঘটে। সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার নাইজেরিয়ায় বন্দুকধারীরা দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জামফারা প্রদেশে আট জনকে হত্যা এবং পরে কমপক্ষে ৬০ জনকে অপহরণ করে বলে বাসিন্দারা এবং স্থানীয় এক নেতা জানিয়েছেন। সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা প্রদেশটির একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কয়েক ডজন ব্যক্তিকে অপহরণ করার দুই দিন পরে এই ঘটনা ঘটলো। অন্যদিকে দেশের উত্তর-পূর্বে সন্দেহভাজন ইসলামপন্থি বিদ্রোহীরা সামরিক নিরাপত্তার অধীনে থাকার গাড়ির কনভয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। এতে দুই সৈন্য এবং চারজন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন বলে পুলিশের একটি সূত্র এবং হামলার প্রত্যক্ষদর্শী একজন গাড়িচালক জানিয়েছেন। হামলাকারীরা পাঁচটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং একটি ট্রাক নিয়ে চলে যায় বলে ওই প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন। রয়টার্স বলছে, প্রেসিডেন্ট বোলা টিনুবু এখনও স্পষ্ট করে বলতে পারেননি কিভাবে তিনি তার দেশের এই ব্যাপক নিরাপত্তাহীনতা মোকাবিলা করবেন। ব্যয়বহুল জ্বালানি ভর্তুকি অপসারণসহ তার অর্থনৈতিক সংস্কার পরিকল্পনা মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়িয়েছে এবং এটি কার্যত দেশটির নাগরিকদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার করেছে। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, রোববার ভোরে বন্দুকধারীরা জামফারার গ্রামীণ মাগামি সম্প্রদায়ের একটি সেনা ঘাঁটিতে আক্রমণ করার চেষ্টা করে, কিন্তু তা ব্যর্থ হয়ে যায়। জামফারা প্রদেশটি স্থানীয়ভাবে ডাকাত নামে পরিচিত সশস্ত্র গ্যাং সদস্যদের তাণ্ডবে কার্যত বিপর্যস্ত। সন্ত্রাসীরা সেখানে মুক্তিপণের জন্য সাধারণ মানুষকে অপহরণ করে থাকে। মাগামির বাসিন্দা শুয়াইবু হারুনা টেলিফোনে রয়টার্সকে বলেন, ‘দস্যুরা বন্দুক ও অন্যান্য অস্ত্র নিয়ে অনেক মোটরসাইকেলে চড়ে এখানে হামলা চালায় (এবং) বিক্ষিপ্তভাবে গুলিবর্ষণ করে।’ মূলত, ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত এই অপরাধী লোকদের দল স্থানীয়ভাবে ডাকাত হিসাবে পরিচিত। গেলো তিন বছর ধরে এই অপরাধীরা নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলজুড়ে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছে। এসময় তারা হাজার হাজার মানুষকে অপহরণ করেছে এবং আরও শত শত মানুষকে হত্যা করেছে। সাধারণত মোটরসাইকেল ও গাড়িতে করে এসব ডাকাতদল আসে। হামলাস্থলে এলোপাথাড়ি গুলি চালায়, লুটপাট করে এবং মুক্তিপণের জন্য অপহরণ করে। ডাকাতদের এই রক্তক্ষয়ী হামলার কারণে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কিছু এলাকায় রাস্তায় চলাচল বা খামারে ভ্রমণ করা অনিরাপদ হয়ে উঠেছে। পশ্চিম আফ্রিকার অন্যতম বৃহৎ দেশ নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলে ডাকাতি, হত্যা, লুটপাট, স্কুলের শিক্ষার্থীদের বন্দি ও জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়ের মতো অপরাধ প্রায় নিয়মিত ঘটনা হয়ে উঠেছে। এসব অপরাধ বন্ধে নাইজেরিয়ার কেন্দ্রীয় সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যথাযথ পদেক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তাদের মতে, সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের পাশাপাশি জঙ্গিগোষ্ঠী বোকো হারাম ও আইএস (ইসলামিক স্টেট) পশ্চিম আফ্রিকা শাখার সদস্যরাও নিয়মিত এসব অপরাধমূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। উল্লেখ্য, গেলো ১৪ বছর ধরে নাইজেরিয়াভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী বোকো হারাম ও আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের বিরুদ্ধে লড়াই করছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন নাইজেরিয়ায় | সন্ত্রাসী | হামলা | ২ | সেনাসহ | নিহত | ১৪