মুসলমানদের কাছে তৃতীয় পবিত্র ধর্মীয় স্থান আল আকসা মসজিদ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) মসজিদটিতে মুসল্লিদের প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা ওয়াফার বরাত দিয়ে সৌদি গণমাধ্যম আল আরাবিয়ার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, আল-আকসা মসজিদ মুসলমানদের কাছে পবিত্র একটি স্থান এবং প্রথম কাবা। সেখানে শুধু মুসলিমরাই নামাজ আদায় করেন। কিন্তু নিয়ম ভঙ্গ করে এখন সেখানে ইহুদিরা প্রার্থনা করছেন।
ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকেই আল আকসা মসজিদ নিয়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। এর মধ্যেই মঙ্গলবার আল-আকসা মসজিদে মুসলমানদের প্রবেশ বন্ধ করে দেয়ার ঘটনা ঘটলো।
জেরুজালেম শহরে অবস্থিত আল আকসা মসজিদ দেখভালের দায়িত্বে থাকা জর্ডানভিত্তিক ইসলামিক ওয়াকফ বিভাগ জানায়, ইসরায়েলি পুলিশ মঙ্গলবার হঠাৎ করে মসজিদটির দিকে যাওয়া সব গেট বন্ধ করে দেয় এবং মুসলমানদের সেখানে প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। এখন ইহুদিদের আল আকসা চত্বরে প্রবেশ ও সেখানে প্রার্থনার সুযোগ করে দিয়েছে ইসরায়েলি পুলিশ।
এর মাধ্যমে এই মসজিদ সম্পর্কিত যে চুক্তি রয়েছে সেটি লঙ্ঘন করা হয়েছে বলেও জানায় সংগঠনটি।
চুক্তি অনুযায়ী, আল আকসা চত্বরে অমুসলিমরা প্রবেশ করতে পারলেও সেখানে শুধু মুসলমানরা প্রার্থনা করতে পারবেন। কিন্তু এরপরও অনেক ইহুদি পুলিশের সহায়তায় সেখানে প্রবেশ করে জোরপূর্বক প্রার্থনা করে থাকে।
ওয়াফা জানায়, মঙ্গলবার সকালে আল আকসায় নামাজ আদায় করতে আসা মুসল্লিদের বাধা প্রদান করে পুলিশ। প্রথমে তারা শুধু বৃদ্ধদের মসজিদে প্রবেশ করতে দিচ্ছিল। এরপর সব মুসল্লিদের প্রবেশ পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেমের পাহাড়চূড়ায় অবস্থিত আল-কুদস, মসজিদুল আকসা বা বায়তুল মাকদিস কিংবা বাইতুল মুকাদ্দাস। পৃথিবীর বরকতময় ও স্মৃতিবিজড়িত ফিলিস্তিনের সুন্দর সুশোভিত প্রাচীনতম জেরুজালেম শহরে অবস্থিত মুসলমানদের তৃতীয় পবিত্রতম মসজিদ। মুসলিম জাতির প্রথম কিবলা ও পৃথিবীর বুকে অবস্থিত— সব জাতি-বর্ণের মুসলমানদের প্রাণস্পন্দন।
আল-আকসা মুসলমানদের কাছে ‘হারাম আল-শরীফ’ নামে পরিচিত হলেও ইহুদিদের কাছে এটি তাদের পবিত্রতম স্থান ‘টেম্পল মাউন্ট’। আল-আকসা মসজিদকে মক্কা ও মদিনার পরই ইসলামের তৃতীয় সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মুসলমানরা বিশ্বাস করেন, নবী মুহাম্মদ (সা.) মেরাজের রাতে কাবা শরিফ থেকে প্রথমে আল-আকসায় এসেছিলেন এবং মেরাজে গমনের আগে এখানে সব নবীর সঙ্গে নামাজের সময় ইমামতি করেন।
আল-আকসাকে কেন্দ্র করে মুসলমানদের সঙ্গে ইসরায়েলি বাহিনীর সংঘর্ষের ঘটনা প্রায়ই ঘটে। চলতি বছরের শুরুতেও সেখানে সংঘর্ষ হয়।