যাত্রী বেশে বাসে ওঠে খাতির জমায় অন্য যাত্রীর সঙ্গে। এক সময় বমি করে যাত্রীর গায়ে ফেলে। যাত্রী তা পরিষ্কারে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এই সুযোগে তার ব্যাগের মূল্যবান জিনিস হাতিয়ে নিয়ে চলে যেত তারা। এভাবে রাজধানীতে একটি চক্র ছিনতাই করে আসছিল। এ কাজে সহায়তা করেন কিছু বাসচালক ও হেলপারং
অবশেষে সেই চক্রের দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলো- সুমন আল হাসান (২৯) ও মো. আবুল হোসেন (৪০)। এসময় তাদের কাছ থেকে দুইটি ছুরি উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) তেজগাঁও থানার ফার্মগেট খামারবাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সামনে থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন।
তিনি জানান, গ্রেপ্তাররা বাসের ভেতর যাত্রীর উপর বমি করে বিশেষ কৌশলে টাকা ছিনতাই করেন। তাদের সঙ্গে কিছু গাড়ি চালক ও হেলপার জড়িত। তাই ছিনতাইকৃত টাকার একটি অংশ তাদেরও দিতে হয় বলে দাবি করেন গ্রেপ্তার দুইজন।
তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তাররা ঢাকার চিহ্নিত ছিনতাইকারী। তাদের গ্রুপে মোট ৫ জন সদস্য রয়েছে। তারা বিভিন্ন বাসে উঠে কৃত্রিম জটলা সৃষ্টি করেন। এরপর নির্দিষ্ট একজনকে টার্গেট করেন। প্রথমে কয়েকজন তাকে ঘিরে ধরেন। এরপর একজন তার উপর বমি করে দেন। এসময় ওই ব্যক্তি কিছুটা অস্বস্তি বোধ করলে বাকি দুইজন কৌশলে তার পকেট থেকে টাকা, মোবাইল হাতিয়ে নেন। এক্ষেত্রে কেউ যদি তাদের কাউকে দেখে ফেলে বা ধরে ফেলে তখন বাকি সদস্যরা ওই ব্যক্তিকেই ছিনতাইকারী বলে মারধর করেন এবং পালিয়ে যান। আর কেউ ধরা খেলে বাকি সদস্যরা ছুরির ভয় দেখিয়েও পালিয়ে যান। তারা নিয়মিত বাসে এই কাজ করেন। ফলে বেশ কিছু ড্রাইভার ও হেলপার তাদের চেনে। এসব ড্রাইভার ও হেলপার তাদের সহযোগিতা করে এবং নিরাপদে বিভিন্ন স্থানে নামিয়ে দেয়। বিনিময়ে তাদেরও নির্দিষ্ট একটি ভাগ দেয় এসব ছিনতাইকারীরা।
শুক্রবার একই কায়দায় একটি বাসে উঠেন বমি পার্টির সদস্যরা। তাদের একজন এসময় একজনের মাথায় বমি করে দেন। এরপর বাকি সদস্যরা ওই ব্যক্তির পকেট থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় তিনি দেখে ফেললে উল্টো তাকেই ছিনতাইকারী বলে মারতে থাকেন তারা। পরে আরও কয়েকজন যাত্রী ঘটনা বুঝতে পেরে এগিয়ে আসলে তিনজন পালিয়ে যান। সুমন ও আবুল হোসেনকে আটক করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাই করা ২০ হাজার টাকা ও দুইটি ছুরি উদ্ধার করা হয় বলেও জানান তিনি।
