শরীর সুস্থ রাখার জন্য নিয়ন্ত্রিত ও নিরবিচ্ছিন্ন ঘুম অপরিহার্য। দেহের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির কার্যকারিতাকে ভালো রাখতেই নয়, গভীর ঘুম মস্তিষ্কের বিকাশ ও মেজাজকেও উন্নত করে তুলতে সাহায্য করে। বহু রোগ ও ব্যধির ঝুঁকি থেকেও রক্ষা করে। কাজের চাপ ও অস্বাস্থ্যকর সামাজিক জীবন বা কোনও অসুস্থতার কারণে অনেক সময় বিশ্রাম নেয়ার সময় পাওয়া যায় না। এক নাগাড়ে কাজ করার কারণে শরীরে ক্লান্তির জেরে ঘুমও আসতে চায় না। চিকিত্সকদের মতে, নিয়মিত পর্যাপ্ত মানের ঘুম না হলে হৃদরোগ, স্থূলতা বা ওবেসিটি, এমনকি ডিমেনশিয়া হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।
শুধু শুয়ে থাকা, ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিছানায় সময় কাটানো ছাড়াও ঘুমের অনেক উপকারিতা রয়েছে। চিকিত্সকদের মতে, প্রতি রাতে কমপক্ষে ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা একটানা ঘুমানো উচিত। ঘুমানোর সময়, ঘুমের গুণমান ও ধারাবাহিকতাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যকর, মৌসুমি ও পুষ্টিকর খাবার খেলে ভালোমানের ঘুম নিশ্চিত করা যায়। রোগা হতে যেমন ডায়েট একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তেমনি গভীর ঘুমের জন্যও পর্যাপ্ত ও সঠিক খাবার খাওয়া উচিত। সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা উচিত।
রোজ ঘুমাতে যাওয়ার আগে খেতে পারেন এ খাবারগুলো-
বাদাম
বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্যকর উপকারিতা। ভিটামিন ও খণিজগুলির মতো বিভিন্ন পুষ্টির দুর্দান্ত উত্স ও ডায়াবেটিস, হৃদরোগের মতো বিভিন্ন দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। ভালো ঘুমের বৃদ্ধিতেও বাদাম খাওয়া উচিত। কারণ এতে রয়েছে মেলাটোনিনের উত্সস্থল, যা শরীর জুড়ে ঘুমের লেগে থাকে। ঘুমের ঘোর আসে দ্রুত।
বাদামে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, যা গভীর ঘুমের জন্য উপযুক্ত উপাদান। এছাড়া অনিদ্রার চিকিত্সার জন্যও কার্যকরী উপাদান। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ম্যাগনেসিয়াম জ্বালাভাব কমাতে সাহায্য করে। স্ট্রেস হরমোনের কর্টিসলের মাত্রা কমিয়ে মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও ভাল।
ভাত
সারা বিশ্বেই ভাত খাওয়ার চল রয়েছে। অত্যন্ত সাধারণ ও প্রধান খাবরগুলির মধ্যে ভাত হল অন্যতম। চালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, পুষ্টি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এছাড়া ভাতে কার্বোহাইড্রেট ও গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি থাকায় ঘুমের জন্য উপযুক্ত খাবার। ঘুমানোর আগে অন্তত এক ঘণ্টা আগে খাওয়া হলে ঘুমের মান উন্নত হয়।
কিউই
সবুজ ও রসালো এ ফলটি সবচেয়ে পুষ্টিকর ফলগুলির মধ্যে অন্যতম। এতে ক্যালোরির মাত্রাও অত্যন্ত কম। কিউইয়ে রয়েছে ভিটামিন সি ও কে, যা হজমশক্তি বাড়াতে ও জ্বালাভাব কমাতে সাহায্য করে। উচ্চা মাত্রার কোলেস্টেরল কমাতেও এই ফল অন্যতম সেরা খাবার। এতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার ও ক্যালোটিনয়েড অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা ঘুম ভালো হতে সাহায্য করে। এছাড়া বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতি রাতে ঘুমানোর এক ঘণ্টা আগে ২টি করে কিউই খাওয়া উচিত। কারণ এ ফল খেলে শরীরে উচ্চমাত্রার সেরোটোনিন তৈরি করে। ভিটামিন সি ও ক্যারোটিনয়েডের মতো অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি থাকায় ঘুম হয় দুর্দান্ত।