বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষা হচ্ছে-এটা দেখতে চায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দেখতে চায় বাংলাদেশি জনগণের মানবাধিকার সুরক্ষিত। শুধু তাই নয়, গত কয়েক মাসে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনা হোক-এমন দাবিও তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র। নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে দলবদ্ধ সহিংসতা ও গণপিটুনিতে বেশ কয়েকজন হত্যার ঘটনা নিয়ে দেশে সমালোচনার ঝড় বইছে। বিষয়টি এখন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়েও আলোচনায় এসেছে।
স্থানীয় সময় সোমবার পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্র্রিফিংয়ে এবিষয়ে বাংলাদেশি এক সাংবাদিক যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান জানতে চান। দস্তগীর জাহাঙ্গীর নামে ওই সাংবাদিকের প্রশ্নটি ছিল, ‘বাংলাদেশে এখন দুর্গাপূজার সময়। বাংলাদেশে নানাবিধ নিরাপত্তা উদ্বেগের মধ্যে হিন্দু সম্প্রদায় তাদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা উদযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এদিকে প্রতিবেশী দেশ ভারতও বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য শান্তিপূর্ণ ধর্মীয় অনুষ্ঠান নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে বার্তা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের জীবন রক্ষার জন্য বাংলাদেশী কর্তৃপক্ষের সাথে মার্কিন সরকার কি কোন ধরণের যোগাযোগ করেছে?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, অবশ্যই আমরা বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষা হচ্ছে এটা দেখতে চাই।দলবদ্ধ সহিংসতা ও গণপিটুনিতে হত্যার ঘটনা বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে এ বিষয়ে বাংলাদেশে মানবাধিকার সুরক্ষাকে কীভাবে যুক্তরাষ্ট্র দেখছে জানতে চান দস্তগীর জাহাঙ্গীর।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কাছে দস্তগীর জাহাঙ্গীরের প্রশ্ন ছিল, ‘বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে দলবদ্ধ সহিংসতা ও গণপিটুনিতে হত্যার ঘটনা বেড়ে যাওয়া নিয়ে গভীর উদ্বেগ ও শঙ্কা প্রকাশ করেছে ফ্রান্সভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা এবং মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ- জেএমবিএফ। এসব সহিংসতা রোধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষগুলোকে আহবা্ন জানিয়েছে সংস্থাটি। এই জরুরি আহ্বানের প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কী কোনো নির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেবে? গোপালগঞ্জের তারেক রহমানের মতো নিরপরাধ ব্যক্তি এবং আরও শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনী মামলার সংখ্যাকে ঘিরে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের আলোকে বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য জবাবদিহিতা কীভাবে নিশ্চিত করবে? মার্কিন সরকার এই মুহূর্তে বাংলাদেশে মানবাধিকার সুরক্ষাকে কীভাবে দেখছে?
জবাবে মার্কিন ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আপনার উল্লেখ করা এসব স্বতন্ত্র বিষয়গুলো নিয়ে আমি কথা বলতে পারি না। তবে আমি আপনাকে বলতে পারি যে, জাতিসংঘ মহাসচিব মাত্র দুই সপ্তাহ আগে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ ধিবেশনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করেছিলেন।
এসময় বাংলাদেশি সাংবাদিক বলেন, ‘চিফ এডভাইজার অফ বাংলাদেশ। আমাদের এখন কোনো প্রধানমন্ত্রী নেই।
বিষয়টি স্বীকার করে ম্যাথিউ মিলার আরও বলেন, ‘ ঠিক বলছেন, আমার মনে হয় তার পদবী ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী। আমরা স্পষ্ট করে দিয়েছি যে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে মানবাধিকার সুরক্ষিত দেখতে চায় এবং গত কয়েক মাসে বাংলাদেশি জনগণের মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ীদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।’
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওই প্রেস ব্রিফিংয়ে গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন, লেবননে তাদের হামলা, ইরান-ইসরায়েলসহ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্কট নিয়ে আলোচনা করা হয়।
এমআর//