বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বারবারই সরব থাকেন পশ্চিমবঙ্গের সংগীতশিল্পী কবীর সুমন। নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজে বাংলাদেশের বিভিন্ন ঘটনায় নিজের মতামত তুলে ধরেন তিনি। কখনো সমসাময়িক পরিস্থিতি নিয়ে লিখেন আবার কখনো তুলে ধরেন গানের লাইনে। জুলাইয়ের অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়েও নানা বিষয়ে সোচ্চার ছিলেন এই শিল্পী।
পশ্চিমবঙ্গের গীতিকার, কবি ও নির্মাতা শ্রীজাত বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি কবিতা নিয়ে সম্প্রতি চর্চা হচ্ছে অন্তর্জালে। সরাসরি না লিখলেও বোঝা যাচ্ছে, তিনি কবিতাটি লিখেছেন বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে। কবিতাটির প্রতিবাদে ফেসবুকে গতকাল রাত থেকে পোস্ট দিয়েছেন বাংলাদেশের অনেক লেখক, কবি ও শিল্পী।
রোববার (১ ডিসেম্বর ) দুপুরে কবীর সুমন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘সীমান্তের কাঁটাতার-বেড়া থেকে ফেলানী যখন ঝুলছিলেন, কিসের কার অবমাননা হচ্ছিল তখন?’ এই লেখায় কারও নাম নেননি সুমন তবে অনেকেই মনে করছেন তিনি মূলত শ্রীজাতকে উদ্দেশ্য করেই এটি লিখেছেন। পোস্টের মন্তব্যের ঘরেও এমনটা লিখেছেন কিছু অনুসারী।
গেলো রাতে সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে কবীর সুমনের আরেকটি ফেসবুক পোস্ট আলোচিত হয়। ওই পোস্টে সুমন লিখেছিলেন, ‘আকারে বড় দেশগুলো মনে করে তারা তাদের আকারে ছোট প্রতিবেশীদেশগুলোর মুরব্বি। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে সে কিউবা, হাইতির বড়দা। পুয়ের্তো রিকোকে তো বড়দা অঙ্গরাজ্য মনে করে। ভারত মনে করে সে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপালের বড়দা।’
তোরা ধর্ম আর রাজনীতি নিয়ে ঝগড়া কাজিয়া করে মর। আমি প্রেম করছি, প্রেম করে যাব।’ এভাবে গতকাল আরেকটি পোস্ট করেছিলেন সুমন।
জুলাই অভ্যুত্থান–পরবর্তীকালে শুধু নিজেই যে লিখেছেন তা নয়, বাংলাদেশি লেখক, শিক্ষকসহ অনেকের লেখাও শেয়ার করেছেন সুমন। তিন দিন আগে একটি লেখা লিখেছেন তিনি। লেখার সারকথা ‘ঘৃণার ফাঁদে পা দেবেন না’।
এর আগে গেলো ৮ আগস্ট বাংলাদেশের ফরিদপুরের একটি ছবি শেয়ার করেছিলেন কবীর সুমন। ছবিটি শহীদ মিনারের। ছবিতে দেখা যাচ্ছে শহীদ মিনারের পাদদেশে লেখা, ‘রুখে দাও ধর্ম নিয়ে রাজনীতি এই দেশটা জুড়ে’।
৭ আগস্ট কবীর সুমনের আরেকটি পোস্ট আলোচিত হয়। ওই লেখার শুরুতে তিনি লিখেছিলেন, ‘কোনো কোনো ভারতীয় বাঙালি বাংলাদেশের নানা ঘটনা সম্পর্কে এমনভাবে লিখছেন যেন গণজাগরণটা তাঁদের মত, উপদেশ নিয়ে করা উচিত ছিল এবং বাংলাদেশকে এখন কোন পথে কীভাবে চলতে হবে, সেটাও বাংলাদেশের জনগণকে এই ভারতীয় বাঙালিদের তুষ্ট করেই ঠিক করতে হবে।’
বড় ওই পোস্টটি তিনি শেষ করেন, ‘আমার মনে হয়, আমরা যেহেতু বাংলাদেশে থাকি না, বাংলাদেশের অনেক কিছুই জানি না, তাই আমাদের বাক্য সংযম শ্রেয়, বিশেষ করে কোনো ঘটনা সম্পর্কে চরম মত দেওয়ার ব্যাপারে’ লিখে।
৬ আগস্ট আয়নাঘরের দুর্বিষহ জীবন নিয়ে আরেকজনের একটি পোস্ট শেয়ার করেছিলেন কবীর সুমন। সেদিন ‘বাংলাদেশ বাংলাদেশ বাংলাদেশ’ নামে আরও একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস দেন তিনি।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন সম্পর্কে একটি গান লেখেন কবীর সুমন। গানটি ফেসবুকে ভিডিও পোস্ট করে গেয়ে শোনান তিনি। গানটির কয়েকটি লাইন এমন, ‘মুক্তির এই আলো, বাংলাদেশ জ্বালালো, এ-লড়াই মুক্তির গান’।
জিএমএম/