মাগুরার সেই শিশুর শারীরিক অবস্থা আবারও খারাপের দিকে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। মেডিকেল বোর্ডের এক চিকিৎসক বলছেন, শিশুটির মস্তিষ্ক এখন ‘মস্তিষ্ক প্রতিক্রিয়াহীন’ হয়ে পড়েছে ।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ ) সকালে মেডিকেল বোর্ডের এক সদস্য গণমাধ্যমকে জানান, গতকাল সোমবার শিশুটির শারীরিক অবস্থায় কিছুটা উন্নতি হয়েছিল। তবে আজ শিশুটির মস্তিষ্ক প্রতিক্রিয়াহীন হয়ে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার সময় শিশুটিকে ফাঁস দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হলে, তার মস্তিষ্কে অক্সিজেনের অভাব সৃষ্টি হয়। পরদিন বেলা ১১টায় হাসপাতালে নেয়ার আগে শিশুটিকে ওই অবস্থাতেই ফেলে রাখা হয়। দীর্ঘ সময় অক্সিজেন না পাওয়ায় তার মস্তিষ্কে মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে।
শিশুটির মামাতো ভাই বলেন, চিকিৎসক তাদের জানিয়েছেন আজ তার অবস্থা ভালো নয়।
চিকিৎসক জানান, গ্লাসগো কোমা স্কেল (জিসিএস) (মস্তিষ্কে আঘাতের কারণে কোনো ব্যক্তির চেতনার মাত্রা পরিমাপ করা হয়) আবারও ৩–এ নেমে এসেছে। স্বাভাবিক মাত্রা ১৫। জিসিএস ৩ অবস্থাকে মস্তিষ্কের প্রতিক্রিয়াহীন অবস্থা বলে বিবেচনা করা হয়। গতকাল সকাল থেকে তার জিএসএস ৩ থেকে উন্নতি হয়ে ৫–এ উঠেছিল বলে অবস্থার কিছুটা উন্নতি ধরে নেয়া হয়েছিল।
বোনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া আট বছরের এই শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছেন শিশুটির মা। শিশুটির ভগ্নিপতি, বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।
গেলো বৃহস্পতিবার (০৬ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার বোনের শাশুড়ি। পরে শিশুটির মা হাসপাতালে যান। ওই দিন দুপুরেই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার রাতেই পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এরপর শুক্রবার রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। সংকটাপন্ন শিশুটিকে গেলো শনিবার (০৮ মার্চ) সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিআইসিইউ থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। শিশুটিকে এখনো লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।
সিএমএইচের প্রধান সার্জনকে প্রধান করে আট সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ বোর্ড গঠন করা হয়েছে। বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন সার্জিক্যাল বিশেষজ্ঞ, স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিশেষজ্ঞ, প্লাস্টিক সার্জন, শিশু নিউরোলজি বিশেষজ্ঞ, অ্যানেস্থেসিয়া বিশেষজ্ঞ, শিশু হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ, শিশু সার্জন, ইউরোলজি বিশেষজ্ঞ এবং থোরাসিক সার্জন বিভাগের চিকিৎসকরা।
এসি//