র্যাপিড অ্যাকশোন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), বিজিবি ও ডিজিএফআইকে নিয়ে কিছু প্রস্তাব দিয়েছে হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ ( এইচআরএফবি)। প্রস্তাবে বলা হয়, র্যাবকে বিলুপ্ত করতে হবে, বিজিবিকে সীমান্তসংক্রান্ত বিষয় ছাড়া অন্য কিছুতে যুক্ত করা যাবে না এবং ডিজিএফআইয়ের কাজ সামরিক গোয়েন্দা তৎপরতায় সীমাবদ্ধ রাখাতে হবে।
বৃস্পতিবার (২০ মার্চ) ধানমন্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে এবং অভ্যুত্থান পরবর্তী সহিংসতার বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের (এইচসিএইচআর) তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদনের সুপারিশ বাস্তবায়নে রোডম্যাপ প্রণয়নের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রস্তাব দেওয়া হয়।
এছাড়া আরও কিছু প্রস্তাব দিয়েছে এইচসিএইচআর। প্রস্তাবগুলো হল:
মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ সংরক্ষণ এবং তা ধ্বংস বা গোপন করার প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণের জন্য পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে, সামরিক ও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের ক্ষেত্রে নিয়মিত আদালতে বিচার প্রক্রিয়া চালু করতে হবে, একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রসিকিউশন সার্ভিস প্রতিষ্ঠা করা এবং বিচার বিভাগের জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা ও জনবল নিশ্চিত করা উচিত, বিচারকদের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে।
এছাড়া মৃত্যুদণ্ডের প্রয়োগ স্থগিত করে তা সম্পূর্ণ বাতিলের দিকে এগিয়ে যাওয়া উচিত, গুমসংক্রান্ত জাতীয় কমিশনকে প্রয়োজনীয় সহায়তা ও সম্পদ সরবরাহ করতে হবে, আটককেন্দ্রের গোপন তথ্য প্রকাশ করা এবং পুলিশের প্রবিধান সংশোধন করা প্রয়োজন, পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর প্রাণঘাতী গুলি ব্যবহার কমিয়ে আনা, নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও ভুয়া মামলার প্রবণতা বন্ধ করা এবং নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যুর প্রতিরোধে আইন কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। নাগরিক সমাজ, সরকার, বিরোধী দল এবং স্বাধীন সদস্যদের সমন্বয়ে একটি জাতীয় পুলিশ কমিশন গঠন করা যেতে পারে, যা নিয়োগ, পদোন্নতি, বদলি এবং অপসারণ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে।
একটি স্বাধীন পুলিশ কমিশনের মাধ্যমে পুলিশ, গোয়েন্দা, বিজিবি, আনসার ভিডিপি এবং সশস্ত্র বাহিনীর যেসব কর্মকর্তা মানবাধিকার লঙ্ঘন বা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত, তাদের অপসারণ করা উচিত। জাতিসংঘ শান্তি মিশন বা অন্যান্য আন্তর্জাতিক মিশনে নিয়োজিত বাংলাদেশি কর্মীদের মানবাধিকার লঙ্ঘন বা যৌন হয়রানির অভিযোগ থেকে মুক্ত রাখতে একটি কার্যকর ও শক্তিশালী মানবাধিকার স্ক্রিনিং ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন।
এছাড়া, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, মানবাধিকার ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে শক্তিশালী করা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষা করা, গণমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, নির্বিচারে গ্রেপ্তার বন্ধ করা এবং নির্যাতন প্রতিরোধে আইন কার্যকর করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিপীড়নমূলক আইন সংশোধন এবং সাক্ষী সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করাও অপরিহার্য।
এমএ//