আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

নভেম্বরে ৫৪১টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৬৭

নভেম্বরে ৫৪১টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৬৭
দেশে নভেম্বর মাসে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫৪১টি। এসব দুর্ঘটনায় ৪৬৭ নিহত ও ৬৭২ জন আহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৫৩ জন নারী ও ৬৬ শিশু ছিল। শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সংবাদ মাধ্যমে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমানের পাঠানো এক দুর্ঘটনা প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়। রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে। এদিকে ২০৭টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১৮১ জন, যা মোট নিহতের ৩৮.৭৫ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৩৮.২৬ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ১০৬ জন পথচারী নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ২২.৬৯ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছে ৬৮ জন, অর্থাৎ ১৪.৫৬ শতাংশ। এই সময়ে ৫টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৫ জন নিহত, ৩ জন আহত হয়েছেন। ২২টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৯ নিহত এবং ১৬ জন আহত হয়েছে। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা ৭৯৬টি। এরমধ্যে রয়েছে বাস ৮৩, ট্রাক ১২৬, কাভার্ডভ্যান ৩৩, পিকআপ ২৯, ট্রাক্টর ১২, ট্রলি ১৩, লরি ১৫, ড্রাম ট্রাক ৪, পুলিশভ্যান ১, অক্সিজেনবাহী ট্যাঙ্কার ১, মিকচার মেশিন গাড়ি ১, চাষের গাড়ি ১, মাইক্রোবাস ১২, প্রাইভেটকার ২২, অ্যাম্বুলেন্স ৫, পাজেরো জিপ ৪, মোটরসাইকেল ২১১, থ্রি-হুইলার ১৩৯ (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-লেগুনা), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন ৩৪ (নসিমন-করিমন-ভটভটি-পাখিভ্যান-মাহিন্দ্র-চান্দের গাড়ি-লাটাহাম্বা-টমটম-পাওয়ারটিলার-ইটভাঙ্গার মেশিন গাড়ি-আখমাড়াই মেশিন গাড়ি), বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা-রিকশাভ্যান ৩৩ এবং অজ্ঞাত গাড়ি ১৭টি। ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ১৩৮টি দুর্ঘটনায় ১১৯ জন নিহত। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম, ২১টি দুর্ঘটনায় ১৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। একক জেলা হিসেবে চট্টগ্রাম জেলায় সবচেয়ে বেশি ৩৮টি দুর্ঘটনায় ৪৯ জন নিহত হয়েছে। সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ঘটেছে খাগড়াছড়ি জেলায়। ২টি দুর্ঘটনা ঘটলেও কোনো প্রাণহানি ঘটেনি। এছাড়া রাজধানী ঢাকায় ২৬টি দুর্ঘটনায় ২০ জন নিহত এবং ৩১ জন আহত হয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণগুলো হচ্ছে— ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন; বেপরোয়া গতি; চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা; বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা; মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল; তরুণ-যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো; জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা; দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা; বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতি এবং গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি। সুপারিশগুলো হচ্ছে— দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে হবে; চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করতে হবে; বিআরটিএ’র সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে; পরিবহন মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে; মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা সার্ভিস রোড তৈরি করতে হবে; পর্যায়ক্রমে সব মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে; গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে; রেল ও নৌ-পথ সংস্কার করে সড়ক পথের ওপর চাপ কমাতে হবে; টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে এবং ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ বাধাহীনভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন নভেম্বরে | ৫৪১টি | সড়ক | দুর্ঘটনায় | নিহত | ৪৬৭