দক্ষিণ কোরিয়ায় চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইয়লের স্বেচ্ছায় পদত্যাগের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছে ক্ষমতাসীন পিপল পাওয়ার পার্টি (পিপিপি)। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দলটির অন্তর্বর্তীকালীন নেতা কভন ইয়ং-সে স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, অভিশংসন বিচার চলাকালীন ইউনের পদত্যাগ "অবাস্তব ও অপ্রাসঙ্গিক"।
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা আনাদোলু’র প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিউলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে কভন বলেন, ‘আমি মনে করি না যে, প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ চলমান সংকটের সমাধান হবে। এটি আইনগত বা সাংবিধানিকভাবে যতই সম্ভব হোক না কেন, এটি সঠিক পথ নয়।’
তিনি আরও জানান, ইউনের পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত একান্তই তার নিজের ব্যাপার, এটি তার আইনি দলের ওপর নির্ভর করে না।
সম্প্রতি ইউনের আইনজীবী দল জানিয়েছিল, তারা "একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত" নিতে পারে, যা নতুন জল্পনার জন্ম দেয়। তবে কভন এই সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘এমন কোনো বিকল্প বাস্তবিকভাবে বিবেচিত হচ্ছে না, এবং যদি বিবেচিত হয়ও, এটি উপযুক্ত পদক্ষেপ হবে না।’
গেলো বছর ৩ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট ইউনের সামরিক আইন জারি দেশকে গভীর রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে ঠেলে দেয়। কভন স্বীকার করেন, এটি ছিল "স্পষ্টতই একটি ভুল" এবং "অতিরিক্ত পদক্ষেপ"।
ক্ষমতার অপব্যবহার ও বিদ্রোহ উসকে দেয়ার অভিযোগে ইউন বর্তমানে ফৌজদারি তদন্তের মুখোমুখি। তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে প্রথম বর্তমান প্রেসিডেন্ট, যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার ওপর বিদেশ ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞাও জারি রয়েছে।
গেলো ১৪ ডিসেম্বর পার্লামেন্টে অভিশংসনের পক্ষে ভোট পড়ার পর থেকেই তিনি দায়িত্ব থেকে সাময়িক বরখাস্ত রয়েছেন। সংবিধানিক আদালত এখন তার ভাগ্য নির্ধারণ করবে, যার জন্য সর্বোচ্চ ছয় মাস সময় রয়েছে। আদালত সিদ্ধান্ত নেবে—ইউন চূড়ান্তভাবে পদচ্যুত হবেন নাকি পুনর্বহাল হবেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, অভিশংসন ও সামরিক আইন জারির ঘটনা দক্ষিণ কোরিয়ার গণতান্ত্রিক ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।
এসি//