গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক ও টঙ্গীতে পৃথক দুই শ্রমিক আন্দোলনের কারণে ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে, ফলে যাত্রীদের তীব্র দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সকালে গাজীপুরের কালিয়াকৈরের মৌচাকে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেন।
শ্রমিকদের অভিযোগ, গেলো শনিবার (০৮ মার্চ ) কারখানার কয়েকজন শ্রমিককে ডেকে নিয়ে মারধর করেন স্টাফরা। এর প্রতিবাদে শ্রমিকরা কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ শুরু করলেও এখনো কারখানা বন্ধ রয়েছে এবং মারধরের কোনো বিচার হয়নি।
সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত শ্রমিকরা মহাসড়কে অবস্থান নেন, এতে মহাসড়কের উভয় পাশে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে যৌথবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছালে শ্রমিকরা মহাসড়ক ছেড়ে আশপাশে অবস্থান নেয়। তবে যান চলাচল পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি, ফলে অনেক যাত্রীকে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে।
অন্যদিকে, গাজীপুরের টঙ্গীর হোসেন মার্কেটে বিএইচআইএস কারখানার শ্রমিকরা বকেয়া বেতন, ওভারটাইম ও ঈদ বোনাসের দাবিতে মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে সড়কের দুই পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
শ্রমিকদের দাবি, তাদের দুই মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে, যা পরিশোধের কথা থাকলেও এখনো দেয়া হয়নি। সোমবার (১০ মার্চ ) শ্রমিকরা কারখানার ভেতরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করলেও মালিকপক্ষ বেতন পরিশোধ না করে নানা টালবাহানা করে। পরে মঙ্গলবার সকালে কাজে যোগ দিতে গিয়ে তারা দেখতে পান, কারখানা কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধের নোটিশ দিয়েছে।
কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের নোটিশে জানিয়েছে, শ্রমিকরা গেলো ১০ মার্চ নিয়মবহির্ভূতভাবে কাজ বন্ধ রেখে ‘উচ্ছৃঙ্খল আচরণ’ করেছে। বারবার অনুরোধ করা হলেও তারা কাজে যোগ দেয়নি, যা কর্তৃপক্ষের মতে অবৈধ ধর্মঘটের শামিল। নাশকতার আশঙ্কায় কর্তৃপক্ষ ১১ মার্চ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে এবং অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান জানান, বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করেছেন, যার ফলে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। শ্রমিকদের শান্ত করার চেষ্টা চলছে।
গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি ফরিদুল ইসলাম জানান, আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের মহাসড়ক থেকে সরানোর প্রচেষ্টা চলছে।
এসি//