আমাদের দৈনন্দিন জীবনে দাঁতের স্বাস্থ্য আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । সুন্দর হাসি, ঝকঝকে দাঁত আমাদের আত্মবিশ্বাস ও ব্যক্তিত্বের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে । তবে শুধুমাত্র সুন্দর দাঁতই যথেষ্ট নয় , সেগুলোর সুস্থতাও বজায় রাখতে হবে । আর এজন্য নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করা ও অন্যান্য যত্ন নেয়া অপরিহার্য । সঠিকভাবে দাঁত ব্রাশ করার কিছু টিপস ও ব্রাশের বেছে নেওয়ার কৌশল সম্পর্কে জানলে সুস্থ ও সুন্দর হাসি আপনিও পেতে পারেন।
সঠিকভাবে দাঁত ব্রাশ করার নিয়ম
প্রতিদিন দাঁত দুটি সময় ব্রাশ করা জরুরি । সকাল ও রাতে অর্থাৎ , ঘুম থেকে ওঠার পর এবং ঘুমাতে যাওয়ার আগে। প্রতিবার দাঁত ব্রাশ করার সময় অন্তত ২-৩ মিনিট ধরে ব্রাশ করুন। যা দাঁতের পুরোপুরি পরিষ্কার হওয়া নিশ্চিত করবে।
ব্রাশ করার সঠিক পদ্ধতি:
১. দাঁত ব্রাশ করার সময় ব্রাশটি ৪৫ ডিগ্রি কোণে দাঁতের গোড়া এবং মাড়ির সংযোগস্থল থেকে শুরু করুন।
২. ধীরে ধীরে ঘুরিয়ে, চাপ দিয়ে ব্রাশ করুন যাতে দাঁতের ফাঁকগুলোও ভালোভাবে পরিষ্কার হয়।
৩. দাঁতের পেছনের অংশ এবং মাড়ির ভেতরের দিকগুলোও ভালোভাবে পরিষ্কার করুন।
৪. ব্রাশের প্রান্ত দিয়ে দাঁতের বাইরের এবং ভেতরের অংশে সামান্য সামনে-পেছনে মুভমেন্ট চালান, যেন কোনো অংশ বাদ না পড়ে।
ব্রাশ বদলানোর সঠিক সময়
সঠিকভাবে দাঁত ব্রাশ করার পাশাপাশি, ব্রাশের স্বাস্থ্যও খুব গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত, একটি টুথব্রাশ দুই থেকে তিন মাস পর্যন্ত ভালোভাবে কার্যকর থাকে। ব্রাশের শলাকা যদি ছড়িয়ে যায় বা মাথা বাঁকা হয়ে যায়, তখনই বুঝতে হবে ব্রাশটি বদলানোর সময় এসেছে। এটি সময়মতো বদলানো হলে দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখা সম্ভব।
ব্রাশের সঠিক নির্বাচন
বিভিন্ন মানুষের মাড়ির ধরন ভিন্ন হয়। কিছু মানুষের মাড়ি নরম, কিছু মানুষের মাঝারি, আবার কিছু মানুষের মাড়ি শক্ত। সেজন্য, মাড়ির ধরন অনুযায়ী ব্রাশ বেছে নেওয়া উচিত।
নরম ব্রিসলস:
যদি আপনার মাড়ি নরম হয়, তবে নরম ব্রিসলসের টুথব্রাশ ব্যবহার করা উচিত।
মাঝারি ব্রিসলস:
যদি আপনার মাড়ি মাঝারি শক্ত হয়, তবে মাঝারি ব্রিসলসের টুথব্রাশ ব্যবহার করতে পারেন।
ব্রাশ বড় না ছোট , কোনটি ভালো
অনেকের মধ্যে ধারণা আছে, বয়স বাড়লে বড় ব্রাশ ব্যবহার করা উচিত। কিন্তু বাস্তবে এটি সঠিক নয়। একে অপরের মাড়ির ধরন অনুযায়ী ব্রাশের আকার নির্বাচন করা উচিত। ছোট আকারের ব্রাশও মাড়ির সীমানা পর্যন্ত পৌঁছাতে সক্ষম । তাই সেটি ব্যবহারে কোনো সমস্যা নেই।
যখন আপনি নতুন টুথব্রাশ কিনবেন তখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ব্রাশের ব্রিসলস যেন নরম ও মসৃণ হয়। শক্ত ব্রিসলস ব্যবহারে মাড়ি ও মুখের চামড়ার ক্ষতি হতে পারে যা থেকে নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে।
ডেন্টাল ফ্লসের উপকারিতা
অনেক সময় দাঁত ব্রাশ করার পরেও দাঁতের ফাঁকে খাদ্যকণা আটকে থাকে। এই খাদ্যকণাগুলো পরিষ্কার করতে ডেন্টাল ফ্লস একটি কার্যকর উপকরণ। এটি দাঁতের ফাঁকগুলো ভালোভাবে পরিষ্কার করে, মাড়ি ও দাঁত সুস্থ রাখে।
নিয়মিত এবং সঠিকভাবে দাঁত ব্রাশ করা, সঠিক ব্রাশের নির্বাচন, ব্রাশ পরিবর্তন ও ডেন্টাল ফ্লসের ব্যবহার এই সকল নিয়ম মেনে চললে আপনি পাবেন সুন্দর, সুস্থ ও ঝকঝকে দাঁত। দাঁতের সুস্থতা বজায় রাখতে এই টিপসগুলো মেনে চললে খুব সহজেই সুস্থ দাঁত উপভোগ করতে পারবেন।
এসকে//