জাতীয়

মারা গেছেন দেশের প্রথম নির্বাসিত কবি দাউদ হায়দার

বায়ান্ন প্রতিবেদন

বাংলাদেশের প্রথম নির্বাসিত কবি দাউদ হায়দার আর নেই। জার্মানির স্থানীয় সময় শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে বার্লিনের একটি রিহ্যাবিলিটেশন হোমে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।

বার্লিনে অবস্থানরত কবির ঘনিষ্ঠজন, সংস্কৃতিকর্মী ও শিল্পী মাইন চৌধুরী পিটু জানিয়েছেন, গেল বছরের ডিসেম্বর থেকে কবি দাউদ হায়দার নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। দীর্ঘ সময় ধরে জার্মানির কয়েকটি হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে তার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে এবং রাতেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

মাইন চৌধুরী পিটু আরও জানান, দাউদ হায়দারের মরদেহ বার্লিনেই দাফন করা হবে। তবে শেষ বিদায়ের স্থান ও সময় নির্ধারণ করা হবে কবির পরিবারের সদস্যদের এবং বার্লিনে থাকা তার ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে আলোচনা করে।

১৯৭৩ সালে ‘কালো সূর্যের কালো জ্যোৎস্নায় কালো বন্যায়’ কবিতার জন্য দাউদ হায়দার গ্রেপ্তার হন। ১৯৭৪ সালের ২০ মে সন্ধ্যায় জেল থেকে মুক্তি দিয়ে পরদিন তাকে কলকাতাগামী একটি বিশেষ ফ্লাইটে পাঠানো হয়, যেখানে অন্য কোনো যাত্রী ছিলেন না। পরে ভারত সরকারও তাকে বহিষ্কার করে। এরপর নোবেলজয়ী জার্মান সাহিত্যিক গুন্টার গ্রাসের উদ্যোগে ১৯৮৭ সালে তিনি জার্মানিতে আশ্রয় লাভ করেন।

দাউদ হায়দারের জন্ম ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি পাবনা জেলায়। পেশাগত জীবনে তিনি ছিলেন একজন ব্রডকাস্টিং সাংবাদিক। কবিতায় আধুনিকতার ছাপ রেখে তিনি হয়ে উঠেছিলেন সত্তরের দশকের অন্যতম প্রধান কবি। তার বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘জন্মই আমার আজন্ম পাপ’। দৈনিক সংবাদ-এর সাহিত্য পাতার সম্পাদক হিসেবেও তিনি কর্মরত ছিলেন।

১৯৭৩ সালে লন্ডন সোসাইটি ফর পোয়েট্রি তার একটি কবিতাকে ‘দ্য বেস্ট পোয়েম অব এশিয়া’ পুরস্কারে সম্মানিত করে।

দাউদ হায়দার প্রবাসে থেকেও বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত ছিলেন। তার মৃত্যুতে বাংলা সাহিত্যের আঙিনায় এক অপূরণীয় শূন্যতা তৈরি হলো।

 

এসি//

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন কবি দাউদ হায়দার | বার্লিন | মৃত্যু