দেশের উত্তরের সীমান্তঘেষা জেলা কুড়িগ্রামের জনজীবন টানা তিন দিন ধরে চলমান তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। প্রখর রোদ ও ভ্যাপসা গরমে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি খেটে খাওয়া মানুষসহ শিশু-বৃদ্ধরা ভোগান্তিতে পড়েছেন।
শনিবার (১০ মে) বিকেল ৩ টার সময় কুড়িগ্রাম জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কুড়িগ্রাম রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বায়ান্ন টিভিকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
অসহনীয় গরমে গ্রামাঞ্চল কিংবা শহরে শিশু, বয়স্কদের জ্বর-সর্দি- ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার প্রকোপ বাড়ছে। গত কয়েক দিনের প্রখর রোদের ঘাম ঝরানো তাপমাত্রার কারণে শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষজন চরম বিপাকে।
বিশেষ করে তীব্র রোদের তাপে দিনমজুর, রিকশাচালক, ঠেলাগাড়ি ও ভ্যানচালকরা কাজে বের হতে পারছেন না। ফলে তীব্র তাপদাহে অনেকেই অলস সময়ও পার করতে দেখা গেছে। আবার অনেকেই জীবন-জীবিকার তাগিদে প্রচণ্ড রোদ ও তাপদাহ উপেক্ষা করে কাজে বেড়িয়েছেন।
তীব্র গরমে একটু স্বস্তি পেতে ঠান্ডা শরবত, পানি, আইসক্রিম খেয়ে সাধারণ মানুষ তৃষ্ণা মেটানোর চেষ্টা করলেও প্রভাব জীব-বৈচিত্র্যের ওপর। এমন প্রচণ্ড গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে খেটে খাওয়া মানুষদের ওপর। একটু শীতলতার জন্য শিশু-কিশোর সবাই পুকুর-নদী-বিলে গোসল করতে দেখা গেছে। মানুষের পাশাপাশি গরু, মহিষ-ছাগলসহ বিভিন্ন প্রাণীকুলেও নাভিশ্বাস দেখা দেওয়ায় কৃষকরা তাদের গবাদিপশু নদী-নালা ও খাল-বিলের গোসল করাচ্ছেন।
কুরুষাফেরুষা এলাকার দিন মজুর কাসেম আলী ও জহুরুল ইসলাম জানান, গত দুই দিন থেকে সেই রোদ। তাই গতকাল কাজে যাননি। শনিবার কাজে বেড়িয়েছি। কাজ না করলে তো পেট ভরবে না।
একই গ্রামের গৃহিণী প্রতিমা রানী বলেন, প্রচণ্ড গরম পড়েছে। বাড়ীতে ছোট ছোট বাচ্চা ও বৃদ্ধ শ্বাশুড়িকে নিয়ে খুবই সমস্যায় আছেন। আমার শ্বাশুড়ির ডাইরিয়া, ছোট ছোট বাচ্চাদের দুই দিন থেকে জ্বর-সর্দি ও কাশিতে ভুগছে।
উপজেলা পশ্চিম ফুলমতি এলাকার কৃষক আব্দুল মালেক জানান, প্রচন্ড গরম। মাঠে কাজও করা যাচ্ছে না। কোন রকমেই মহিষ দুটি নদীর পানিতে নামিয়ে দিয়ে পাশে একটি গাছের তলায় আশ্রয় নিয়েছেন।
জেলা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছেন আগামী রোববার থেকে বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
আই/এ