বাংলাদেশ

বর্ষবরণের প্রস্তুতি শেষ, উদযাপনের অপেক্ষায় গোটা দেশ

বর্ষবরণের প্রস্তুতি শেষ, উদযাপনের অপেক্ষায় গোটা দেশ
রোববার ১৪ এপ্রিল।  এদিন উদযাপিত হবে বাংলা নববর্ষ ১৪৩১-এর প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ। নানান আয়োজনের মধ্য দিয়ে এই দিনটিকে বরণ করবে বাঙালিরা। রাজধানীর রমনার বটমূল থেকে শুরু হবে এই উদযাপন। এবারের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শুরু হবে সকাল সোয়া ৬টায়। ভোরে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ৩০টি পরিবেশনার মধ্য দিয়ে বাংলা নতুন বছরকে স্বাগত জানাবেন ছায়ানটের শিল্পীরা। শেষ হবে ৮টা ৩০ মিনিটে। তবে অংশগ্রহণ এবং গান পরিবেশনার ওপর ভিত্তি করে অনুষ্ঠানের পরিধি আরো বাড়তে পারে। বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে ছায়ানটের পক্ষ থেকে যাদের প্রবেশের বিশেষ কার্ড দেওয়া হয়েছে, তারাই শুধু সীমানার ভেতরে প্রবেশ করতে পারবেন। অন্য সবাই বর্ষবরণের এ আয়োজন উপভোগ করতে পারবেন নিরাপত্তাবেষ্টনীর বাইরে বসে। আয়োজকরা জানান, এবার রমনা বটমূলে প্রবেশ গেটের সংখ্যা আটটি। তার মধ্যে প্রবেশপথ তিনটি যথাক্রমে অরুণোদয়, রমনা রেস্তোরাঁ, অস্তাচল। বের হওয়ার পথ দুটি যথাক্রমে বৈশাখী ও উত্তরায়ণ। একই সঙ্গে প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ তিনটি যথাক্রমে শ্যামলিমা, স্টার গেট ও নতুন গেট। প্রতিটি গেটে সিসি ক্যামেরা, ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ এবং র‍্যাব। তাদেরও নববর্ষে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রস্তুতি নিতে দেখা গেছে। শনিবার (১৩ এপ্রিল) বেলা ১১টায় রমনা বটমূল এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার হাবিবুর রহমান। তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, বর্ষবরণ উৎসব আয়োজনে সামগ্রিক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। আর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রতিটি ইউনিট সচেষ্ট রয়েছে। সন্ধ্যার আগে অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলী গণমাধ্যমকে বলেন, এমন নিরাপত্তাবেষ্টনীর মধ্যে সাংস্কৃতিক আয়োজন শিল্পী ও দর্শক—সবার জন্যই অস্বস্তিকর। তবে পরিস্থিতি মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। মঙ্গল শোভাযাত্রা ঢাবির চারুকলা অনুষদ থেকে রোববার সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। তিনি বলেন, প্রতিবারের মতো এবারও চারুকলা অনুষদ পহেলা বৈশাখ উদযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। রোববার সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হবে। শোভাযাত্রাটি চারুকলা থেকে শুরু হয়ে ঢাকা ক্লাব ও শিশু পার্ক ঘুরে টিএসসিতে এসে শেষ হবে। এ ছাড়া বিকেল ৫টা পর্যন্ত চারুকলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলবে। নববর্ষ বরণে ঢাবির চারুকলা অনুষদের দেয়ালে ইতোমধ্যে বিভিন্ন চিত্র অঙ্কন করা হয়েছে। দেয়ালে দেয়ালে ফুটে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক, বুড়িগঙ্গার নৌকা, মা ও প্রকৃতির বিভিন্ন চিত্র। শিক্ষার্থীদের আঁকা দেয়ালচিত্রে ঠাঁই পেয়েছে ফুল, মাছ, নৌকা, বাঘ, ময়ূরসহ নানা ফুল-পাখি। দর্শকরা ঘুরে ঘুরে চারুশিল্পীদের আঁকা বিভিন্ন চিত্র দেখছেন। এ ছাড়া মঙ্গল শোভাযাত্রার জন্য চারুকলার ভেতরে চলছে মুখোশ, পুতুল ও ছবি আঁকার কাজ। এদিকে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী জেলায় জেলায় বর্ষবরণের প্রস্তুতি নিয়েছে। এবার তাদের পহেলা বৈশাখের সর্ববৃহৎ অনুষ্ঠানটি হবে যশোরে। এ ছাড়া খুলনা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, চাঁদপুর, নেত্রকোনা, বরিশালে নববর্ষ পালনের প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। উদীচীর সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেন, ছায়ানটের বর্ষবরণ সফল করতে আমরাও সহযোগিতা করছি। বর্ষবরণে উদীচী কার্যালয়ে ঘরোয়াভাবে আনন্দ আয়োজনের ব্যবস্থা রয়েছে নববর্ষ আয়োজনের নিরাপত্তা সম্পর্কে পুলিশ সদর দপ্তরের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের পুলিশ সুপার ইনামুল হক সাগর জানান, পহেলা বৈশাখ বাঙালির ঐতিহ্য। বর্ষবরণ প্রস্তুতির শুরু থেকেই এবার সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন বর্ষবরণের | প্রস্তুতি | শেষ | উদযাপনের | অপেক্ষায় | গোটা | দেশ