এখন থেকে রূপান্তরকামী খেলোয়াড়েরা আর অংশগ্রহণ করতে পারবেন না মেয়েদের খেলায়। এবার এমনটাই জানিয়ে দিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার এ সংক্রান্ত একটি নির্বাহী আদেশে সইও করে ফেলেছেন তিনি।
মহিলাদের খেলায় রূপান্তরকামী অ্যাথলিটদের নিষিদ্ধ করেই ক্ষান্ত হচ্ছেন না ডোনাল্ড ট্রাম্প। বরং ২০২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিক্সের আগে সার্বিকভাবে মহিলাদের খেলা থেকে রূপান্তকামী অ্যাথলিটদের নিষিদ্ধ করে দেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) উপরে চাপ তৈরির পরিকল্পনা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্প জানিয়েছেন, ২০২৮ সালে যখন আমেরিকার লস অ্যাঞ্জেলসে গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক্সের আসর বসবে, তার আগেই যেন এই ‘চূড়ান্ত অযৌক্তিক বিষয়ের’ নিয়ম পালটে ফেলা হয়।
এ সময় ট্রম্পের সঙ্গে ছিলেন বেশ কয়েক জন শিশু ও মহিলা ক্রীড়াবিদ। ছিলেন মার্কিন হাউস স্পিকার মাইক জনসন, কংগ্রেসওম্যান মার্জোরি গ্রিন-সহ শীর্ষস্থানীয় রিপাবলিকান নেতারাও। নির্বাহী আদেশে সইয়ের পর বিজয়ের হাসি হেসে ট্রাম্প বলেন, ‘‘আজ থেকে মেয়েদের খেলাধুলার বিরুদ্ধে দীর্ঘ যুদ্ধের অবসান হল!’’
প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব নেয়ার পরেই ট্রাম্প স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে, আমেরিকায় এবার থেকে সরকারি খাতায় দুটিই লিঙ্গ থাকবে— পুরুষ এবং স্ত্রী। এর বাইরে আর কোনও লিঙ্গপরিচয়কে স্বীকৃতি দেয়া হবে না।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্প জানিয়ে দেন, শীঘ্রই তিনি এ বিষয়ে একটি নির্বাহী আদেশও জারি করবেন। নানা সূত্রে জল্পনা শুরু হয়, এখন থেকে পাসপোর্ট, ভিসা এবং অন্য সব সরকারি নথিপত্রে পুরুষ এবং মহিলা— এই দুটি লিঙ্গেরই উল্লেখ থাকবে। নির্দেশ অনুসারে, শারীরিক গঠনগত দিক থেকে যে মানুষ যে লিঙ্গের, শুধু মাত্র সেটিরই উল্লেখ থাকবে সরকারি নীতিতে।
রূপান্তরকামীদের জন্য এর আগে সরকারি নথিতে আলাদা লিঙ্গের ব্যবস্থা নিয়ে নীতি চালু করেছিলেন আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। চার বছর আগে ওভাল অফিসের দায়িত্ব নিয়ে প্রথম দিনেই বাইডেন এই নীতি চালু করেছিলেন।
ট্রাম্প দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসতেই ওই নীতি বদলে ফেলতে উদ্যোগী হন। এমনকি, ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারের প্রায় ৫০ শতাংশ জুড়েই ছিল সমকামী ও রূপান্তরকামীদের বিরুদ্ধে প্রচার। প্রেসিডেন্টের শপথগ্রহণের দিন ওয়াশিংটনের বিশপ ম্যারিয়ান এগডার বাড সমাজে সমকামী-রূপান্তরকামী মানুষদের অস্তিত্ব স্বীকার করতে সরাসরি ট্রাম্পকে অনুরোধ করেন। কিন্তু তাতে চিঁড়ে ভেজেনি। ট্রাম্প রয়ে গেছেন ট্রাম্পেই। সেই আবহে এ বার এই নির্দেশকে ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
বুধবার ট্রাম্প বলেন, ‘‘আমরা মেয়েদের খেলাধুলার ঐতিহ্যকে রক্ষা করতে চাই। আমার পুরুষদের মেয়েদেরকে মারধর কিংবা জখম করতে দেব না। এখন থেকে মেয়েদের খেলা শুধু মেয়েদেরই।’
জেএইচ