গত বছরের আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে দেশে ফেরা হয়নি সাকিব আল হাসানের। ফলে খেলাও হয়নি বাংলাদেশ দলের হয়ে। অনেকেই ধরে নিয়েছেন, এটাই হয়তো তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষ অধ্যায়। তবে সাকিব নিজে এখনো সে ভাবনায় নেই। দেশের ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই ক্রিকেটার এখনো স্বপ্ন দেখছেন বাংলাদেশের জার্সি গায়ে খেলে ক্যারিয়ার শেষ করার।
বাংলাদেশের একটি ইংরেজি দৈনিককে দেয়া সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে সাকিব বলেন, ‘আমি যখন বুঝলাম এত চাপ নিয়ে খেলতে পারব না, তখনই মনে হয়েছে, এটা হয়তো শেষ। কিন্তু কখনোই মনে হয়নি আমি দেশের হয়ে খেলতে চাই না- এই ইচ্ছাটা এখনো আমার মধ্যে আছে, সব সময়ই থাকবে। এ নিয়ে আমি বিসিবি সভাপতি থেকে শুরু করে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সবার সঙ্গেই কথা বলেছি ।’
সাকিব সর্বশেষ বাংলাদেশের হয়ে খেলেছেন ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে, ভারতের কানপুরে অনুষ্ঠিত একটি টেস্টে। তখনই তিনি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেন এবং অক্টোবরের মিরপুর টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সাদা পোশাকে বিদায় জানান। ওয়ানডে ফরম্যাটে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত খেলার আগ্রহও প্রকাশ করেছিলেন তিনি।
কিন্তু রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে সাকিবের কোনো পরিকল্পনাই বাস্তবায়ন হয়নি। সাবেক আওয়ামী লীগ সাংসদ হিসেবে তাকে জানানো হয়, নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে দেশে না আসাই শ্রেয়। সেই পরামর্শ মেনেই তিনি বিদেশেই অবস্থান করছেন।
তবে দেশে না ফিরতে পারলেও দেশের হয়ে খেলার ইচ্ছায় ভাটা পড়েনি ৩৮ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডারের।
সাক্ষাৎকারে সাকিব বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি আগে সংসদ সদস্য ছিলাম, কিন্তু এখন তো আর কোনো রাজনৈতিক পদে নেই। আমি যে কাজটা গত ১৮–২০ বছর ধরে করে আসছি (বাংলাদেশের হয়ে খেলা), সেটাকে হঠাৎ থামিয়ে দেয়া কি ঠিক হবে? আমি এখনো দেশের হয়ে খেলে সুন্দরভাবে ক্যারিয়ার শেষ করতে চাই। এক সিরিজ হোক বা দুই সিরিজ, এমনকি এক বছর খেলি- সে পরিকল্পনা করার সুযোগ তো থাকা উচিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের হয়ে খেলা আমার সবচেয়ে বড় স্বপ্ন। সেটা পূরণে আমি সবকিছু করতে রাজি। এ জন্য আমি ক্রীড়া উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টা এবং বিসিবি সভাপতির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করছি।’
তবে বিসিবির প্রতি কোনো অভিযোগ নেই সাকিবের। তিনি বলেন, ‘সবারই তো একটা সীমাবদ্ধতা আছে।’
১৯ বছর ধরে দেশের হয়ে খেলা এই ক্রিকেটার মনে করেন, বাংলাদেশ দলের হয়ে আরও খেলার সুযোগ পাওয়া তার প্রাপ্য।
সাকিব বলে, ‘আমি বিশ্বাস করি, দেশের হয়ে খেলার সুযোগটা আমার প্রাপ্য। বেশির ভাগ মানুষও চান, আমি জাতীয় দলের হয়ে ক্যারিয়ার শেষ করি। আমার মনে হয়, আমি আরও এক–দুই বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে পারব।’
এসি//